হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
অক্টোবর ২২, ২০২২, ০৭:০৯ পিএম
হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
অক্টোবর ২২, ২০২২, ০৭:০৯ পিএম
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি চুরির ঘটনা বেড়েছে। গত দুই রাতে ১৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। চুরি ঠেকাতে কোনো কোনো এলাকায় রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকাবাসী জানান, হরিরামপুর উপজেলায় গত দুই দিনে ১৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এর আগে একমাসে আরও কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ চুরিই রাতের বেলায় হয়েছে।
গত ২০ ও ২১ অক্টোবর উপজেলার ধুলশুড়া ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের ১৫টি বাড়িতে এ চুরির ঘটনা ঘটে। গত ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আইলকুন্ডি গ্রামের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেনের (৪৪) বাড়ি হতে ১টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১৭১৫ টাকা, মো. মোকবুল হোসেনের (৫০) বাড়ি হতে ২ ভরি ওজনের একটি রুপার নূপুর ও ১ টি মোবাইল, মো. হাশেমের (৪৫) বাড়ি হতে ১টি মোবাইল, রামেশ্বরপুর গ্রামের জিতেন চন্দ্র মন্ডলের (৫০) বাড়ি থেকে ১টি মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটে। রামেশ্বরপুর গ্রামের মো. বাচ্চু শেখ (৫২) ও মো. সিহাব হোসেন (৫৫) এর বাড়িতে সিধ কাটলেও চোর কোনো মালামাল নিতে পারেনি।
এছাড়াও ২১ অক্টোবর শুক্রবার মধ্যরাতে একই ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে ১টি মোবাইল, ২টি লুঙ্গী, ১টি শাড়ী, মোহনপুর গ্রামের মো. রুমি হোসেনের (৪০) বাড়ি থেকে ১টি মোবাইল ও নগদ পঁচিশ হাজার টাকা, মো. খালেকের (৪২) বাড়ি থেকে ১টি স্বর্ণের চেইন ও ১টি মোবাইল, গঙ্গারামপুর গ্রামের মো. হুমায়ন হোসেনের (৪৫) বাড়ি হতে ১০ ভরি ওজনের রুপা ও নগদ ১০০০ টাকা এবং ১ টি শাড়ী, মো. মোতালেব শেখের (৫৫) বাড়ি থেকে ১টি শাড়ী এবং মো.করিম খানের (৫৫) বাড়ি থেকে ২টি মোবাইল চুরি হয়। এ ঘটনায় এলাকায় জনমনে বেশ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। চুরির ঘটনায় ১২টি বাড়ির তথ্য মিললেও বাকি ৩টি বাড়ির তথ্য পাওয়া যায়নি।
গঙ্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ধুলশুড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিদ মাহমুদ রবিন বলেন, আমার প্রতিবেশী খালেক চাচার ঘরের সিঁধ কেটে চোর স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গঙ্গারামপুর গ্রামের খালেক মিয়ার স্ত্রী জানান, শুক্রবার ভোররাত পৌনে চারটার দিকে চোর সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের আমার গলায় থাকা চেইন ছিড়ে নিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ না দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ভয় হয় বলে থানায় অভিযোগ দেইনি। যদি চোরেরা আবার ক্ষতি করে। কেউ কেউ বলে থানায় অভিযোগ দিলে যে টাকার চেইন চুরি হইছে তার চেয়ে বেশি খরচ লাগতে পারে, এজন্যও অভিযোগ দেইনি।"
ধুলশুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জায়েদ খান মুঠোফোনে বলেন, "দুই রাতে ১৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আগে কখনো এধরনের ঘটনা আমার ইউনিয়নে ঘটেনি। এর সাথে কারা জড়িত তা শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার পর গতকাল রাত থেকে গ্রাম পুলিশসহ আমি নিজেই রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছি।"
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, "এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ধুলশুড়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে মোবাইল, জামাকাপড়, লুঙ্গি চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরির ধরন শুনে ছিচকে চোর মনে হয়েছে। এ ঘটনা জানার সাথে সাথে ওই এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। চোর ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।"
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, হরিরামপুরে সাম্প্রতিক সময়ে চুরির ঘটনা বেড়েছে। দুইদিন আগে ধুলশুড়া ইউনিয়নে ১৫ টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরবো। তবে, পুলিশের টহল বাড়ানো জরুরি।
কেএস