ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ, মহেশখালী
অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০৫:২০ পিএম
ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ, মহেশখালী
অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০৫:২০ পিএম
চলতি বছরের গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন মহেশখালীর খুদে বিজ্ঞানি খ্যাত সিরাজুল মোস্তফা আপেল নামে এক প্রতিভাবান ছেলের বিষয়ে বক্তব্য নিতে মহেশখালীর ইউএনও মোহাম্মদ ইয়াছিনের সরকারি নাম্বারে ফোন দেন দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ। এ সময় ইউএনওকে ভাই সম্বোধন করে আপেলের বিষয়ে প্রশ্ন করেন সবুজ। স্যার না ডেকে ভাই ডাকায় সাংবাদিক সবুজের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ফারদার আর ভাই না ডেকে স্যার সম্বোধন করতে বলেন ইউএনও ইয়াছিন। পরে সাংবাদিকের প্রশ্নে উত্তর না দিয়েই ফোন কেটে দেন তিনি।
এরপর প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীকে কেনো স্যার ডাকতে হবে জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সকল সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দেন সাংবাদিক সবুজ। শুধু তা নয়, ঐ ঘটনার পর সম্প্রতি সরকারের উন্নয়নমূলক একটি প্রোগ্রামে স্থানীয় এমপির সামনেই ফের সাংবাদিকতা পেশা ও সাংবাদিকদের নিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্য করেন এ ইউএনও।
তিনি বলেন, হোয়াট ইজ্ সাংবাদিক? সরকারি প্রোগ্রামে কেনো দাওয়াত দিতে হবে? দাওয়াত ছাড়া আসলে আসবে না আসলে নাই। এ বিব্রতকর অবস্থায় এমপি আশেক উল্লাহ রফিক এ সব বিষয় নিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন।
সূত্র মতে, ইউএনও মোহাম্মদ ইয়াছিন মহেশখালীতে যোগদান করার পর থেকেই সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গণমাধ্যম থেকে আড়াল করে চলছেন প্রতি মুহূর্ত। সরাদেশে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে সরকারের উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্য সংবাদিকদের জানায় না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
তাছাড়া প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংবাদ তৈরি করার জন্য বক্তব্য নিতে সাংবাদিকরা ইউএনওকে ফোন করলে ফোন রিসিভ করে না, ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেয় না বলে জানান অনেকে। এমনকি সরাসরি দেখা করে বক্তব্য নিতে চাইলে বক্তব্য দেওয়াতো দূরের কথা সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে সরিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ তুলেন সাংবাদিকরা।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সিরাজুল মোস্তফা আপেলের আবিস্কৃত কয়েকটি প্রকল্প প্রদর্শনী করলেও প্রকল্প যন্ত্রাংশ বাড়ি থেকে উপজেলা সদরে আনা-নেওয়া থেকে সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে হয়েছে খুদে বিজ্ঞানী খ্যাত আপেলকে। কোনো রকম অনুদান দেয়নি উপজেলা প্রশাসন। এ নিয়ে চরম হতাশ হয়েছিলেন সিরাজুল মোস্তফা আপেলের পরিবার। পরে হতাশার সুর নিয়ে বাড়ি ফিরে যান আপেল ও তার পরিবার। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তার আবিষ্কৃত প্রকল্প প্রদর্শন নিয়ে প্রথমে আপেলের পরিবারকে উচ্ছ্বসিত দেখা গেলেও পরে মলিন চেহারার ফিরতে হয় তাদের।
জানা গেছে, ইউএনও মোহাম্মদ ইয়াছিনের পূর্বের কর্মস্থল খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে থাকা অবস্থায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনায় এক দিন মজুর শ্রমিককে ঘটনা সাজিয়ে জেলে পুরে দেন এ ইউএনও। যেখানে স্বাভাবিকভাবে সরকারি ঘর পাওয়া দুষ্কর সেখানে একই উপজেলায় একই ব্যক্তির দুই স্ত্রীর দুজনকেই মুজিবর্ষের ঘর দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে নিজ উদ্যোগে পূর্বের কর্মস্থল ত্যাগ করার সময় নাটকীয় মানববন্ধন করিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন ইয়াছিন। মহেশখালীতে এসেও থেমে নেই তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। সর্বশেষ সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করার মাধ্যমে ফের বিতর্কিত হন তিনি।
কেএস