এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর
অক্টোবর ২৬, ২০২২, ০৩:২৫ পিএম
এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর
অক্টোবর ২৬, ২০২২, ০৩:২৫ পিএম
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ফরিদপুরে গত দুই দিনে প্রবল বর্ষণে নদী-নালা,খাল-বিলে বৃদ্ধি পেয়েছে পানি। আর এই নতুন পানিতে বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরার ধুম পড়েছে। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধদের সবাই মাছ ধরতে ব্যস্ত।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভোর থেকে দিন ব্যাপী বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরতে দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, কেউ মাছ ধরছেন জীবিকার তাগিদে, কেউ বা শখের বশে। তবে শখের বশেই অধিকাংশরা মাছ ধরায় মেতে উঠেছেন। খেপলা জাল, টানা জাল, ঠেলা জাল,ধর্ম জাল দিয়ে এসব মাছ ধরা হচ্ছে। কেউ আবার হাত দিয়ে, পাটিবাঁধ ও চাঁইয়ের (মাছ ধরার ফাঁদ) সাহায্যে ধরছেন মাছ।
তাদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। ট্যাংরা, সরপুঁটি, চান্দা, তারা বাম, পুঁটি৷ শোল, টাকি, চিংড়ি, কৈ,বাতাসী মাছই বেশি ধরা পড়ছে জালে। এছাড়াও কাতল, রুই, সিলভার কার্প চায়না পুঁটিমাছও ধরা পড়ছে। অনেকে দিনের বেলায়, আবার রাতের আধারে এককাঁটা, তেকাঁটা ও কোঁচ দিয়েও বড় মাছ শিকার করছেন।
এ সময় মূলত ধরা পড়ে বোয়াল, রুই, শোল, গজার ইত্যাদি। হঠাৎ করে বৃষ্টির কারনে পানি বৃদ্ধিতে দেশীয় এসব মাছ যেন আনন্দ নিয়ে এসেছে এসব শৌখিন মানুষ ও জেলেদের চোখমুখে। নিজেদের খাওয়াদাওয়ার চাহিদা মিটিয়ে অনেকে বাজারে বিক্রিও করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মধুখালী উপজেলার রায়পুর ও জাহাপুর ইউনিয়নের মাঝামাঝি ব্রাহ্মণকান্দা এলাকার ষাটগাছা সুইচগেট সংলগ্ন কুমার নদীর শাখা খালে মাছ ধরার ধুম পড়েছে। এখানে অনেকের মতো খেপলা জাল, ধর্ম জাল নিয়ে খালে মাছ ধরতে এসেছেন পাশের দাড়িড়পাড় গ্রামের শৌখিন মাছ শিকারী আকরাম হোসেন, মন্টু মোল্লা ও আজিজার শেখ।
তারা বলেন, গত দুই দিনে প্রবল বর্ষণে খালে-বিলে পানি বেড়েছে। তাই জাল-দড়ি নিয়ে নেমে পড়েছি খালে। দেশী সরপুঁটি, পুঁটি,শিং, শোল, ট্যাংরা, টাকি,বাইম সহ রুই, কাতলা,সিলভার কার্প, কৈ, রয়না মাছ পেয়েছি। ভালোই মাছ ধরা পড়েছে। আমাদের মতো অনেকেই এসেছে মাছ ধরতে।
জাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ রিপন জানান, জাহাপুর ও পার্শ্ববর্তী রায়পুর ইউনিয়নের বিভিন্ন খালে-বিলে-জলাশয়ে অসংখ্যক মৎস্য শিকারীদের মাছ ধরতে দেখা যায়।
তবে বেশিরভাগই তারা নিজেদের খাওয়ার জন্য মাছ শিকারের নেমেছেন। প্রত্যেকেই দেশীয় বিভিন্ন জাতের মাছ পেয়েছেন।
বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালিয়ান্ড খালে মাছ শিকারের ধুম পড়ার দৃশ্য দেখা যায়। খেপলা জাল, পোলো, বরশি এবং বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে স্থানীরা মাছ ধরতে নেমে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বোয়ালমারী অজানা গল্প ফেসবুক গ্রুপের মডারেটর হ্রদয় ইসলাম বলেন, খুব সকাল থেকেই এলাকাবাসী মাছ ধরার বিভিন্ন যন্ত্র নিয়ে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। সবাই কম-বেশি বিভিন্ন জাতের মাছ শিকার করেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা মৎস্য কর্মকতা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, গত দুই দিনে বৃষ্টির কারনে বিভিন্ন নদনদী,খাল-বিলে হঠাৎ সামান্য পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারনে বিভিন্ন স্থানে শৌখিন মাছ শিকারীরা মাছ ধরতে নেমেছেন। সাধারণ উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে বৈধভাবে দেশী মাছ শিকারে বিধিনিষেধ নেই। বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে বিভিন্নভাবে প্রচারের মাধ্যমে জেলেদের এবং মাছের আড়তদারদের সচেতন করা হয়েছে কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারি জাল, নদী আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করে অবৈধভাবে মাছ শিকার না করতে।
এছাড়াও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, বেড়জাল এবং বিনজাল ব্যবহারকারী জেলেদের আইনের আওতায় আনার জন্য উপজেলা কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
কেএস