Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

অগ্নিকাণ্ডের সাড়ে চার মাস পর ৯ শর্তে

বিএম ডিপোতে রপ্তানি পণ্য ওঠানো-নামানো শুরু

মো. মাসুম বিল্লাহ

অক্টোবর ২৭, ২০২২, ০৯:৪৭ এএম


বিএম ডিপোতে রপ্তানি পণ্য ওঠানো-নামানো শুরু

সাড়ে চার মাস পর সেই বিএম কনটেইনার ডিপোতে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ প্রক্রিয়ার সাময়িক অনুমোদন দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এই পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য ৯টি শর্ত বেঁধে দিয়ে গত মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।

এসব শর্তপূরণ সাপেক্ষে আগামী তিন মাস রপ্তানি পণ্য ওঠানো-নামানো করা যাবে ডিপোতে। শর্তগুলো প্রতিপালন না হলে তিন মাস পর এই অনুমোদন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বাতিল হয়ে যাবে।

এর আগে গত আগস্ট মাসে খালি কনটেইনার ওঠানো-নামানোর অনুমোদন দিয়েছিল কাস্টমস; তখনো দুটি শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই শর্ত প্রতিপালন হয়েছে কি না যাচাইয়ে গঠিত কমিটি তদন্ত করছে। এরই মধ্যে রপ্তানি পণ্য রাখার নতুন অনুমোদন দেওয়া হলো।

শর্তগুলো হলো:- ডিপোতে কার্যক্রম শুরুর আগে বন্দর কর্তৃপক্ষের অনাপত্তিপত্র নেওয়া; বেসরকারি অফডক স্থাপন ও পরিচালন সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২১ এবং বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স বিধিমালা, ২০০৮-এ প্রযোজ্য শর্তাবলি ওই সময়ের মধ্যে প্রতিপালন; কেমিক্যাল পদার্থবাহী কনটেইনার আইএমডিজি নীতিমালার আলোকে পৃথক ইয়ার্ড ও শেডের ব্যবস্থা করা; ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর থেকে অনুমোদিত ফায়ার সেফটি প্লান্ট সংগ্রহ ও অগ্নিনির্বাপণী শর্ত পরিপালন; পুরো আইসিডি সিসিটিভির আওতায় আনা; কাস্টমস কর্মকর্তাদের শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্নের প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান; আইসিডির বাইরে একাধিক স্থানে ব্যাক-আপ স্টোরেজ স্থাপন করা এবং অফডক পরিচালনার লক্ষ্যে ব্যবহৃত নিজস্ব সফটওয়্যারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক প্রবেশাধিকারের শর্ত অন্যতম।

গত ৪ জুন রাতে বিএম ডিপোতে আগুন থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ ৫১ ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক ব্যক্তি।

অগ্নিবিস্ফোরণে ডিপোর একাংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দুর্ঘটনায় রপ্তানি পণ্যবাহী ১৫৪ কনটেইনার ও আমদানি পণ্যবাহী দুটি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জানতে চাইলে বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নুরুল আকতার বলেন, ‘পোশাক খাতের রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুমোদন দিয়েছে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) থেকেই এই রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হ ইয়েছে বলে জানাযায়।’

নুরুল আকতার বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে ডিপোতে সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা আরও উন্নত করা হয়েছে। আগুন নেভাতে পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ চলছে। কাস্টমসের শর্ত অনুযায়ী এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতি পাওয়া চট্টগ্রামের ২০টি কনটেইনার ডিপোর একটি বিএম ডিপো। দুর্ঘটনার আগে বিএম ডিপোতে মোট আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ৮ শতাংশ ব্যবস্থাপনা হতো।

দুর্ঘটনার পর বিএম ডিপোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে অন্য ডিপোগুলোর ওপর চাপ পড়ে। এ কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ, চট্টগ্রাম চেম্বার ও ডিপো সমিতি এই ডিপোতে (বিএম) আমদানি-রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দিতে এনবিআরের কাছে চিঠি দেয়।

এনবিআর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়ার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অনুশাসন প্রদান করে।

বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষও সব ধরনের কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন চেয়ে দুই দফায় কাস্টমসে আবেদন করে। এই আবেদনে সংস্কার কার্যক্রম ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অগ্রগতি তুলে ধরে তারা।

তারপরই বিএম ডিপোকে সাময়িক সময়ের জন্য পোশাক খাতের রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

টিএইচ
 

Link copied!