Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি

নভেম্বর ১৪, ২০২২, ০৬:২৫ পিএম


ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন

শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কাশিখন্ড এলাকায় পারিবারিক কবরস্থান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য এক গৃহবধূর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। যৌতুকের দাবিতে ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে মারার অভিযোগে তার বাবার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে লাশটি তোলা হয়।

নিহত গৃহবধূর নাম সাবিনা ইয়াসমিন (১৯)। তিনি উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের কাশিখন্ড গ্রামের কাঞ্চন গাইনের মেয়ে।

তাকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শ্বাশুরি, ভাসুর, ননদসহ বাড়ির পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 
আদালতে মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ মার্চ গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের কাশিখন্ড গ্রামের শাহাদাত হোসেন রাজিবের (২৮) সঙ্গে একই গ্রামের কাঞ্চন গাইনের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়। সাবিনা তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক চেয়ে প্রায়ই সাবিনাকে মারধর করা হতো। একই কারণে ২৬ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে রাজিব তার মা রোকেয়া বেগম (৬০), বোন কাকলি বেগম (১৯), ভাই নাজমুল হোসেন রাড়ী (৩৩) ও তার প্রতিবেশী আত্মীয় পান্টু আহমদ মাঝিকে (৪৫) নিয়ে স্ত্রী সাবিনাকে মারধর করে। তারা সাবিনাকে রড দিয়ে পিটানোসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি মারে এবং শ্বাসরোধ করে। এমতাবস্থায় তাকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় সাবিনার বাবা কাঞ্চন গাইন তার মেয়েকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে ১ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে নালিশ দাখিল করেন। ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ স্বপন কুমার সরকার বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় সাবিনার স্বামী রাজিব, শাশুরি রোকেয়া, ননদ কাকলি, ভাসুর নাজমুল ও প্রতিবেশী পান্টুকে আসামি করা হয়।

রাজিবের প্রতিবেশী আলহাজ্ব মৃধার ছেলে শিশু হানিফ (১০) জানায়, আমি খেলতে যাচ্ছিলাম, তখন রাজিব ভাইর বাড়িতে চিৎকারের শব্দ পাই। সেখানে গেলে দেখি রাজিব ভাই ও তার পরিবারের লোকজন সাবিনা আপাকে গলায় ধরে মারধর করছে।

নিহত সাবিনা ইয়াসমিনের বাবা কাঞ্চন গাইন ও মা মোকসেদা বেগম বিলাপ করে বলেন, রাজিব ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের মেয়ে সাবিনাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি। তাই পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করি। মামলার পর ময়নাতদন্তের জন্য মেয়ের লাশ উত্তোলন করেছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই। হত্যাকারীদের বিচার চাই।

গোসাইরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সাবিনাকে যদি হত্যা করা হয়ে থাকে, তাহলে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে করে এলকায় এমন ঘটনা আর না ঘটে।

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম সিকদার জানান, আদালতের নির্দেশে গোসাইরহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন দাশ গুপ্তের উপস্থিতিতে কবরস্থান থেকে সাবিনার লাশ তোলা হয়।

গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাশ গুপ্ত বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আজ ১৪ নভেম্বর শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম কবর থেকে মরদেহ তোলার নির্দেশ দেন। তাই মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।

কেএস 

Link copied!