জহিরুল হক রাসেল, কুমিল্লা
ডিসেম্বর ৪, ২০২২, ০৯:১৮ পিএম
জহিরুল হক রাসেল, কুমিল্লা
ডিসেম্বর ৪, ২০২২, ০৯:১৮ পিএম
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের ধোপাখিলা গ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরির আঘাতে নিহত হয় মাইনুল ইসলাম পাভেল (১৭) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। পরে নিহত কিশোরের মা লিপি ইসলাম (৪০) বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় এজাহারনামীয় নয়জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৫ থেকে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানা এবং জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর একটি টিম কুমিল্লা ও ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এ ঘটনায় ৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় ঘটনায় ব্যবহৃত সুইস গিয়ার (চাকু) উদ্ধার করা হয়।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম (বার) এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন— ফেনী জেলার গজারিয়া কান্দি (শর্শদি) এলাকার ফারুক আহাম্মেদের ছেলে আবু হুরাইরা অনিক (১৯), আলকরা ইউপির কুলাসার এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে মোঃ সালমান হোসেন (২২), কুলাসার বড় বাড়ির রবিউল হক ওরপে জানু মিয়ার ছেলে নাঈমুল হক রাকিব (১৯), ধোপাখিলা গ্রামের শামছুল হকের ছেলে নাজিমুল হক জয় (১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাঈমুল হক রাকিবের সাথে গত একমাস আগে নিহত পাভেলের সাথে ফেনী শহরে কথা কাটাকাটি হয়। উক্ত ঘটনাটি আসামি নাঈমুল হক রাকিব তার বাড়ি আলকরা এলাকায় এসে স্থানীয় বন্ধুদের জানায়। তখন থেকেই নাঈমুল হক রাকিব ও তার সহযোগী আসামিরা ভিকটিম পাবেলকে মারধর করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। তাছাড়া কয়েকদিন আগে গ্রেপ্তারকৃত ও পলাতক আসামিরা পাভেলের নানার বাড়িতে গিয়ে পাভেলকে খোঁজে আসে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে কলেজ শিক্ষার্থী পাবেল নানার বাড়ি চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়নের অন্তর্গত ধোপাখিলা মনু ভূঁইয়ার বাড়ীর সামনে ব্যাডমিন্টন খেলছিল। এসময় নাঈমুল হকসহ আসামিরা পাবেলকে হত্যার জন্য মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে একত্রিত হয়। পরে পরিকল্পিতভাবে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কিশোরদের ছুরিকাঘাতে পাবেল মারা যায়। এসময় পাভেলের চারজন বন্ধু আহত হন।
আহত কিশোর ইকবাল ও সিয়াম চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে এবং শাহাদাত হোসেন ও বিজয় ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিহত কিশোর পাভেল মহিপাল সরকারি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র এবং আহত কিশোররা তার নিকটতম বন্ধু।
এ সময় প্রেসব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ এবং অপারেশন) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, বিপিএম, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম, চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা, জেলার গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়াসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলার প্রকৃত রহস্য পাওয়া গেছে। আমরা পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে।
কেএস