Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪,

সন্দ্বীপে আমনের বাম্পার ফলন

সন্দ্বীপ প্রতিনিধি

সন্দ্বীপ প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ৭, ২০২২, ০৪:৫৫ পিএম


সন্দ্বীপে আমনের বাম্পার ফলন

উত্তরের হালকা বাতাস উপকূল সন্দ্বীপ অঞ্চলের পাকাধান ক্ষেতের শীর্ষে ধুলছে এখন কৃষকের স্বপ্ন, বাবু চড়ুই কবুতরের পাশাপাশি কৃষকের গৃহপালিত গরু মহিষ ছাগল হাঁস মুরগী নতুন পাকাধান খাওয়ার আশাই হানা দিচ্ছে।সন্দ্বীপ উপজেলার  চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।  উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। রোপা আমন চাষের নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। সন্দ্বীপ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নের কৃষক পরিবারের সংখ্যা হলো ৪০৮৭০টি তার মধ্যে ভূমিহীন ১১৫৮০, প্রান্তিক, ১৩৩৭০ মাঝারি ১১৫২৬, ক্ষুদ্র ৪১৯৬, বড় ১৯৮ কৃষক রয়েছে।

এখানে এক ফসলা জমি ১১ হাজার হেক্টর, দুই ফসলা জমি ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর, তিন ফসলা জমি ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর, মোট প্রকৃত আবাদী জমি/নীট ফসলী জমি ২৪ হাজার ৪০০ হেক্টর, সর্ব মোট আবাদ যোগ্য জমি ২৭ হাজার ৯০০ হেক্টর, মোট ফসলী জমি আছে ৪২ হাজার ৭০০ হেক্টর।

উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৩৮৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায়  আমন রাজা শাইল, আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ৮০০ হেক্টর। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রা ২৯ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। তবে কৃষি জমির সেচ সংক্রান্ত তথ্য জানা যায় এ উপজেলার সেচ ভুক্ত জমির হেক্টর ১৭৩৬, যা সেচের হার আট শতাংশ। এল এলপি এর সংখ্যা ৭৫টি। এ উপজেলার কৃষি যন্ত্রপাতি সেচ সংক্রান্ত তথ্য জানা যায় পাওয়ার টিলার ১২৫ টি ট্রাক্টর ৫টি স্পে মেশিন ৪৫টি ফুট পাম্প ২০টি। জমির প্রকারভেদ হিসাব করলে দেখা যায়, সন্দ্বীপ উপজেলার জলাভূমি জমি ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর, বনভূমি জমি ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর, মধ্যম উঁচু জমি ১৫ হাজার ২২৭ হেক্টর, নিচু জমি ১৭১ হেক্টর, চাষ যোগ্য পতিত জমি ৫৪০ হেক্টর, স্থায়ী পতিত জমি ১৫৫ হেক্টর, লবণাক্ত জমি ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর, উপকূলীয় এলাকা ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি রয়েছে, মোট ৩৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে আমন খরিপ ২ এ  সন্দ্বীপে ২৩ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধানের উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার হাজার ৭৫ মেট্রিক টন। রামগতি উপজেলায় নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৮০০ হেক্টর।

আমন রোপার ১ মাসের মাসের মাথায় অক্টোবর মাসের ২৪-২৫ তারিখ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এ ধানের সামান্য ক্ষতি হলে ও পরবর্তী আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ধানের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। দিগন্তজুড়ে সবুজের সমারোহে সোনালি ধানের শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। পাকা সোনালি ধানের আভায় স্বপ্ন দেখছে কৃষক। দিন যতই যাচ্ছে ধানের রূপ ততই বদলাচ্ছে। এখন চলছে ধান কাটার প্রস্তুতি। কোথাও কোথাও ধান কাটতে দেখা গেছে কৃষকদের। দিগন্তজুড়ে সবুজের সমারোহে সোনালি ধানের শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। অনেক কৃষক পাকা ধান কাটতে শুরু করছেন অনেকে একনই কাটবেন। মগধরা এলাকার কৃষক বেলাল বলেন  এক একর জমিতে তিনি আমন ধান আবাদ করেছেন। ফলন খুব ভালো হয়েছে। কিছু ধান কাটার উপযুক্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এসব ধান কাটবেন তিনি।

সারিকাইত ইউনিয়নের কৃষক মো. হারুন জানান, আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আমন ধানের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। তিনি প্রায় দুই একরের চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষাবাদ করেন। তবে উপজেলার একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের ফলন ভালো হলে ও তারা ধানের দাম নিয়ে খুশি না, তাদের জমি খড় থেকে শুরু করে ধান কেটে এসে ঘরে তোলা পর্যন্ত যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে সে অনুযায়ী ধানের দাম পাচ্ছেন না।

সন্দ্বীপ  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন  বলেন, ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে আমরা কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছি। এতে চলতি রোপা আমন মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। যা ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

এসএম

Link copied!