নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ১২, ২০২২, ০৬:১৫ পিএম
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ১২, ২০২২, ০৬:১৫ পিএম
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ‘শ্যামপুর কুড়’ নামে একটি জলাশয় তিন বছর ধরে দখলে নিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছ শিকার করছেন স্থানীয় একজন প্রভাবশালী। এতে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ওই কুড়ে প্রতিবছর ১০-১৫ লাখ টাকার মাছ শিকার করা যায় বলে জনান স্থানীয়রা।
ওই ব্যক্তির নাম মো. আতিক মিয়া। তিনি উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা।
উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে অবস্থিত সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ‘শ্যামপুর কুড়’ ২০০৮ সালে আদালতের রায়ে জনগণের মাছ শিকারের স্বার্থে উন্মুক্ত করা হয়। এর আয়তন ৪.৭২ একর।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের লোকজন কুড়টি লিজ দিয়ে সেইটাকার কিছু অংশ গ্রামের মসজিদ মাদ্রাসায় দানসহ স্থানীয় লোকজনের স্বার্থে ব্যয় করা হয়। কিন্তু গত তিন বছর ধরে শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিক মিয়া কুড়টি দখলে নিয়ে মাছ শিকার করছেন।
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো. রেজাউল করিম গত অক্টোবরে কুড়টি আতিক মিয়ার কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে সহকারী কমিশনারকে কাছে লিখিতভাবে জানান। তিন বছর ধরে আতিক মিয়ার দখলে থাকা কুড়টি উদ্ধারে প্রয়োজনে মামলা করারও পরামর্শ দেন।
এলাকাবাসী জানান, শ্যামপুর কুড়টি থেকে প্রতিবছর ১০-১৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা সম্ভব। পাশের একটি নদী খনন করায় চলতি বছর দ্বিগুণ মাছ হবে। আতিক মিয়া ক্ষমতার দাপটে তিন বছর ধরে এটি দখল করে লাখ লাখ টাকার মাছ ধরে বিক্রি করছে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষ মাছ ধরা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। কাগজে কলমে এই কুড়টি উন্মুক্ত হলেও প্রভাবশালী আতিক মিয়া এটিকে দখল করে রেখেছেন। স্থানীয়দের অনেক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এতদিনেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। কুড়টি এলাকার সম্পদ তাই এটি উন্মুক্ত করে এলাকার মানুষের মাছ ধরার অধিকার নিশ্চিত করার দাবি তাদের।
শ্যামপুর গ্রামের মজিবুর রহমান জানান, উন্মুক্ত কুড়টি তিন বছর ধরে ক্ষমতার দাপটে দখল করে রেখেছেন আতিক মিয়া। এলাকার মানুষের দাবিকে তিনি পাত্তা দিচ্ছেন না। এমনকি প্রশাসবনও তার কাছ থেকে কুড়টি উদ্ধার করতে পারছে না। প্রতি বছর এখানে ১৫-২০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। এলাকার মানুষ এখানে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দ্রুত এই কুড়টি দখল মুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
শ্যামপুর গ্রামের লিটন তালুকদার জানান, ক্ষমতার দাপটে আতিক মিয়া জনগণের মাছ ধরার জায়গাটি তিন বছর ধরে দখল করে রেখে মাছ শিকার করেছেন। গত তিন বছর ধরে তিনি কুড়টি দখল করে মাছ শিকার করছেন। সাধারণ মানুষ মাছ শিকার থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। আমরা এলাকার লোকজন নানান জায়গায় এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন ফল পাইনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আতিক মিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ম্যিাত বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, গত দুই বছর এই কুড়টি এলাকার লোকজনের কাছ থেকে লিজে নিয়েছিলাম। উল্টো এলাকার লোকজন আমার নামে মামলা করেছে। এবার আমাকে আড়াইলাখ টাকায় ফের লিজ নিয়েছি। তারা আমার নামে মামলা প্রত্যাহার করলে টাকা দেব। নইলে টাকা দেব না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, এই কুড়টি আদালতের রায়ে এলাকাবাসীর অনুকুলে উন্মুক্ত ঘোষণা হয়েছিল। এখন তারা নিজো কি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। আদালতে মামলাও হয়েছে। ঝামেলার প্রেক্ষিতে প্রশাসনের অধীনে আনার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হব।
কেএস