Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

চার কোটির সেতু এখন গলার কাঁটা

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ১৮, ২০২২, ০৩:৫২ পিএম


চার কোটির সেতু এখন গলার কাঁটা
  •  ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালে
  • ৮০ শতাংশ কাজ করে বিল উত্তোলন ৩ কোটি ৩০ লাখ

চার দফা মেয়াদ বাড়িয়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী গ্রামে ‘চান বাজার’ সংলগ্ন কাউখালী খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীদের কাছে গলার কাঁটা হয়ে ঝুঁলছে।

নির্মাণকার্যাদেশের চার বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৮০ শতাংশ। নানা অজুহাত দেখিয়ে একের পর এক সময় বাড়িয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নির্মাণ কাজের অগ্রগতির ব্যাপারে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মিজানুল কবির। পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী জানালেন ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে ২০১৮ সালে। যা ২০১৯ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। বেঁধে দেয়া সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপরে নানা অজুহাত দেখিয়ে সময় বাড়িয়ে পাড় করে দিয়েছে চার বছর। ২০ মিটারের তিন স্প্যানে করা সেতুটি এখন দাঁড়িয়ে আছে দুই স্প্যানে। এরমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মূল্যের ৩ কোটি ৩০ লাখ ৮১ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। মন্থরগতিতে সেতুর কাজ করায় স্থানীয়রা ক্ষোভে ফুঁসছে। কৃষিপণ্য পরিবহণ নিয়ে দুর্ভোগে রয়েছে ২০০ জন তরমুজ চাষী। সেতুর পাশেই গাছের গুঁড়ি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো বানিয়ে পারপার করছে ওই এলাকার লোকজন ও কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে লং ব্রিজ কন্সট্রাকশন (এলবিসি) প্রকল্পের আওতায়। উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী খালের ওপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করে এলজিইডি। সেতুটির নির্মাণব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ১৬৮ টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩২ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণ কাজ পেয়েছে কিউসি-পিএস-ডিসিএল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় যাতায়াত সম্যসায় পড়েছে এখানকার শিশু শিক্ষার্থী, বয়স্ক বৃদ্ধা, নারী শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। খাল পারাপারে বিকল্পপথ না থাকায় পাড় হচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইকবাল আহ্ম্মেদ বলেন, ‘রাঙ্গাবালী মধ্যে কাউখালীর চর তরমুজ চাষে অন্যতম এলাকা। এই চরে সবার আগে তরমুজ চাষ করা হয়। আগাম তরমুজের অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে। ওই এলাকার কৃষকদের প্রধান সম্যসা হয়ে দাঁড়িছে কাউখালী খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতু। ফলে কৃষি উপকরণ ও অন্যান্য পণ্য পরিবহন এবং এখানকার উৎপাদিত পণ্য মূলবাজারে পৌঁছাতে নানা জটিলতা তৈরী হয়। যদি দ্রুত সময়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা হয়, এতে করে কৃষক ও স্থানীয়দের মূলভূখন্ডের সাথে যোগাযোগ সহজ ও সাবলীল হবে।’

এ ব্যাপারে এলজিইডি পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. লতিফ হোসাইন বলেন, ‘সেতুর অসম্পূর্ণ নির্মাণকাজের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে গেছে। ঠিকাদারের সাথে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে এবং সামনের জুন মাসের মধ্যে যেভাবে হোক সেতুর কাজ শেষ করবো।’

এদিকে যথা সময়ে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার জটিলতা সম্পর্কে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক।

কেএস 

Link copied!