Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪,

সন্তানকে বাঁচাতে মায়ের আকুতি

‘আমি লিভার দেবো, আপনারা চিকিৎসার খরচ দিন’

মো. নাজমুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি

মো. নাজমুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৫, ২০২২, ০৩:৪৩ পিএম


‘আমি লিভার দেবো, আপনারা চিকিৎসার খরচ দিন’

এগারো বছরের ফারহান সাদিকের শৈশব ছিল বাকী বন্ধুদের মতোই দুরন্তপনায় ভরপুর। কিন্তু আট বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। দেশে চিকিৎসা নিয়ে জানা যায় না অসুস্থতার কারণ। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের হায়দ্রাবাদে।

সেখানে গিয়ে জানা যায়, বিকল হয়ে পড়েছে সাদিকের লিভার। সুস্থ হতে দ্রুত তার লিভার পরিবর্তন করতে হবে। মায়ের লিভারের অংশ সাদিককে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সন্তানকে সুস্থ করতে লিভার দিতে রাজি মা, কিন্তু অর্থের অভাবে আটকে আছে চিকিৎসা। নিজের জমানো টাকা, বসতভিটা বিক্রি ও আত্মীয়দের সহযোগিতার পরও এখন প্রয়োজন আরও অর্থের। তাই ছেলেকে চিকিৎসা করাতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন সাদিকের পরিবার।

ছোট থেকেই চার-পাঁচটা স্বাভাবিক শিশুদের মতোই ছিল ফারহান সাদিকের শৈশব। পড়াশোনা ও খেলাধুলাসহ সবকাজে ছিল বেশ চতুর। হঠাৎ অসুস্থতায় কমে গেছে তার সেই দুরন্তপনা। আট বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে পড়ে সাদিক। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করেও ধরা পড়েনি কোনো সমস্যা।

সাদিক ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের সরকারপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও বাবলী বেগম দম্পতির ছেলে। দুই ছেলের মধ্যে সাদিক ছোট। সে সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। অসুস্থতার কারণে বন্ধ তার পড়াশোনা। এখন বাড়িতেই শুয়ে বসে সময় কাটছে তার। চিকিৎসার খরচ জোগাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার।

সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা নিয়ে শিশু সাদিক জানায়, ‘দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর থেকে আর পড়াশোনা করতে পারিনি। সহপাঠীরা এবার পঞ্চম শ্রেণিতে। আমি বড় হয়ে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হতে চাই। সবাই সহযোগিতা করলে চিকিৎসা নিয়ে হয়তো আমি সুস্থ হবো।

সাদিকের মা বাবলী বেগম দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘ছেলেকে সুস্থ করতে স্থানীয়সহ দেশের বড় বড় ডাক্তার দেখিয়েছি। কোনো রোগ ধরা পড়েনি। ভারতে নিয়ে যাওয়ার পর লিভার ক্যানসারের বিষয়টি ধরা পড়ে। সাদিকের বাবা ও আমি দুজনে লিভার দেওয়ার কথা বলি। আমারটা তাকে দেওয়ার উপযোগী মনে করেন চিকিৎসক। তারা বলেছেন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সাদিকের অপারেশন করা লাগবে। এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর টাকা।’

তিনি আরও বলেন, আমরা টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করছি। স্বজনদের থেকে নিয়েও হচ্ছে না। আমি লিভার দেবো, আপনারা খরচটা দিন। সবার সহযোগিতা পেলে আমার ছেলে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। আবারও বিদ্যালয়ে যেতে পারবে।

সাদিকের বাবা দেলোয়ার হোসেন দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার পর তারা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি নেবে। সব মিলিয়ে ৩০ লাখ টাকার মতো অপারেশন খরচ লাগবে। আমার আয়ের উৎস তেমন নেই। সকলের কাছে সাহায্য চাই আমার সাদিককে বাঁচার সুযোগ করে দিন।

এসএম

Link copied!