Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

বই উৎসবের দ্বিতীয় দিন

ফরিদপুরে বই দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৩:৩৬ পিএম


ফরিদপুরে বই দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ রাখায় বই উৎসবের দ্বিতীয় দিন ভর্তি হতে আসা ও বই নিতে আসা অনেক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ফেরত যেতে দেখা গেছে। এদিকে সেশন ফি, ভর্তি ফিসহ ৭শত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। টাকা না দিলে বই মিলছে না শিক্ষার্থীদের। সরকারি বন্ধ না থাকলেও স্কুল বন্ধ করে স্কুলের তালার চাবী নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাহিদ ও বিদ্যালয়ের সভাপতি কায়ূম মোল্যাকে বিদ্যালয়ের মাঠে ও বাহিরে ঘুরতে দেখা যায় সোমবার বই উৎসবের দ্বিতীয় দিন দুপুর ১২ টার দিকে।

সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের অফিস-সহ সকল কক্ষ তালা দেওয়া। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বই নিতে এসে শিক্ষকদের খুঁজে বেড়াচ্ছে।

বই নিতে ও ভর্তি হতে আসা ৮ম শ্রেণীর জান্নাতুল, সাদিয়া, বলেন, বই উৎসবের প্রথম দিন ৫টি বই পেয়েছি। আজ সোমবার স্কুলে এসে দেখি স্কুলের অফিস-সহ সকল রুম তালা দেওয়া। ৮ম শ্রেণীর মিম বলেন, আমাকে শুধু বিজ্ঞান বই দিয়েছে।

কদমী গ্রামের নাগর মিয়া বলেন, তার ছেলে হামিম মিয়াকে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার জন্য এসেছে, শিক্ষকরা না থাকায় ভর্তি না করে বই না নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।

ডহরনগর গ্রামের মোরশেদা বেগম বলেন, তার জমক দুই ছেলে রাজু মিয়া ও রবি মিয়া এ বছর ৮ম শ্রেণী থেকে পাশ করে ৯ম শ্রেণীতে উঠেছে। তাদের দুই ভাইকে ৯শ্রেণীতে ভর্তি ও বই নিতে এসেছে। 
তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক বলেছেন, ভর্তি ও সেশন ফিসহ ৭শত টাকা লাগবে। টাকা না দিলে ভর্তি হতে পারবে না।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাহিদ বলেন, বই উৎসবের প্রথম দিন রোববার সকালে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা সকালে স্কুলে এসে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বই দিয়ে স্কুল থেকে চলে যান। পরে সভাপতি সকলকে সাথে নিয়ে কিছু বই দিয়েছে। বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক সকল রুম তালা দিয়ে রেখে চলে যায়। যার কারণে আমরা কোন শিক্ষার্থীকে বই দিতে পারছি না।

বিদ্যালয়ের সভাপতি কায়ূম মোল্যা বলেন, বই উৎসবের প্রথম দিন বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক সকালে স্কুলে এসে কিছু শিক্ষার্থীর নিকট থেকে টাকা নিয়ে বই দিয়েছে। জানতে পেরে সকল শিক্ষার্থীকে টাকা দিতে নিষেধ করি। পরে প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা স্কুল থেকে চলে যায়। তিনি (সভাপতি) সকলকে সাথে নিয়ে কিছু শিক্ষার্থীকে বই দেন।

তিনি আরও জানান, সেশন ফিসহ যাবতীয় ফি পরে নেওয়া হবে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তা মানছেন না। 
সভাপতি বলেন, এ বছর সেশন ফি সহ কোন কিছুই নির্ধারন করা হয়নি। তা ছাড়া গত অক্টোবর ৩০ তারিখে বিভিন্ন অনিয়মের কারনে প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মোল্যাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক মো. শাহাজাহান মোল্যা বলেন, তিনি ঢাকায় সরকারী কাজে গিয়েছেন। বই উৎসবের দিন শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া হয়েছে।

টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে না, শুধু ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে যারা ভর্তি হতে আসছে তাদের নিকট থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তাকে অবৈধ ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্কুল বন্ধ রাখায় অনেক ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে এসে ফিরে যাচ্ছে খবর পেয়েছি। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) স্কুলে গিয়ে সব কিছু শোনে উপরে রিপোর্ট দেওয়া হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেএস

Link copied!