কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৯:০২ পিএম
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৯:০২ পিএম
দিনের আলোয় সরকারি দিঘির চারপাশের ভূমি থেকে বেলজিয়াম, আকাশমনি প্রজাতির ১০৫টি গাছ কেটে লুপাট করেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। এতে সরকারের ৩ লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। গত দু’দিন যাবত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ৪নং শমশেরনগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সতিঝিরগ্রামের সরকারি দিঘির চারপাশ থেকে সারিকৃত গাছগুলো কর্তন করে বিক্রি করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কেটে ফেলা ২৫টি গাছ দেখাশুনার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ১০টায় সতিঝিরগ্রামের দিঘির পাশ থেকে গাছ কাটছেন একই গ্রামের শহীদ মিয়া ও উজ্জ্বল মিয়া। পুলিশ দেখার পরই তারা গাছ কাটার যন্ত্রপাতি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে দিঘির তিনপাশের কেটে ফেলা বেলজিয়াম ও আকাশমনি প্রজাতির ১০৫টি গাছের গুড়া পাওয়া যায়। সেখানে কেটে ফেলা ও মাটিতে পড়ে থাকা ২৫টি গাছ পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সোহেল রানা গাছগুলো স্থানীয় ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেনকে দেখভাল করার দায়িত্ব দেন। ১০৫টি গাছের বাজার মূল্য প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা হবে বলে স্থানীয়রা জানান। এতে সরকার ৩ লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে।
সতিঝিরগ্রামের বাসিন্দা মুকিদ মিয়া বলেন, আমার ভাইসহ এলাকার কয়েকজন মিলে এই গাছগুলো রোপন করেন। তবে গাছগুলো কে বা কারা বিক্রি করেছে তা আমার জানা নেই।
অভিযুক্ত উজ্জ্বল মিয়া বলেন, আমি শ্রমিক হিসাবে গাছ কাটতে গিয়েছিলাম।
এ ব্যাপারে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটার বিষয়টি দেখা গেছে। ১০৫টি গাছের গুড়ি পাওয়া গেছে। শ্রমিকরাও আমাদের টের পেয়ে পালিয়ে গেছেন। কেটে ফেলা ২৫টি গাছ স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছি।
তবে সংশ্লিষ্ট মেম্বার সানোয়ার বলেন, পুলিশ আমাকে কেটে ফেলে যাওয়া ২৫টি গাছের দায়িত্ব দিতে চাইলে আমি দায়িত্ব সমজিয়া নিই নাই। পরবর্তীতে এসিল্যান্ড আমাকে ১৪টি গাছের দায়িত্ব দিলে আমি তা সমজিয়া নিই বলে ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন আরও বলেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) সোমাইয়া আক্তার বলেন, তিনদিন ধরে গাছ কাটা হচ্ছে অথচ আমাকে আজ জানানো হলো। সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই তহশিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ সদর তহশিল অফিসের তহশিলদার ইবুঙ হাল বলেন, আমার অফিসের একজন স্টাফ সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পেয়েছেন। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হবে।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার শরীফ আহমেদকে সরেজমিন দেখা হলে তিনি বলেন, এটা ১নং খতিয়ানের জায়গা তাই কমলগঞ্জ এসি ল্যান্ড স্যার বিষয়টি দেখছেন। আমাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার এসি ল্যান্ড স্যারের সাথে বলেছেন বলে জানান শরীফ।
কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশীলদার অশোক মাধব বলেন, রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
এলাকার কয়েকজন বলেন, এত বড় একটি ঘটনা হয়ে গেল নিশ্চয়ই এদের মদদদাতা কেউ না কেউ তো রয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মুখোশ উন্মোচনসহ জড়িতদের শাস্তির দাবি তাদের।
কেএস