Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলায় ৮৪ বছরের জেল

নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম


৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলায় ৮৪ বছরের জেল

যশোরে দুদকের পাঁচটি মামলায় পৃথক ধারায় নড়াইল সদর ইউনিয়নের সাবেক ভূমি কর্মকর্তাকে সর্বমোট ৮৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামি নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শুক্তগ্রামের মৃত প্রিয়নাথ বিশ্বাসের ছেলে।

তিনি চাকরিকালে বিভিন্ন সময় ভূমি উন্নয়ন করের ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯শ’ টাকা আত্মসাৎ করেন। যা প্রমাণিত হওয়ায় আসামির উপস্থিতিতে যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি আশরাফুল আলম বিপ্লব। তিনি জানান, আসামিকে আত্মসাতকৃত টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে পাঁচটি মামলায় (কনকারেন্টলি) সর্বোচ্চ সাত বছর সাজা ভোগ করা লাগবে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে নারায়ণ চন্দ্রের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় সরকারি কর্মচারী কর্তৃক অসদাচরণ ও সরকারি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন।

মামলায় তিনি উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৯-২০০০ ও ২০০০-২০০১ অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের জাল চালানের মাধ্যমে নারায়ণ চন্দ্র ৪ লাখ ৫১ হাজার ৫০৯ টাকা আত্মসাৎ করেন। তদন্তে এর সত্যতা পান তিনি।

এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক আমিনুর রহমান। তদন্তে তিনিও সত্যতা পান। এ ঘটনায় তিনি পৃথক ধারায় আদালতে পাঁচটি চার্জশিট জমা দেন। বিচারকালে পাঁচটি চার্জশিট পৃথক পাঁচটি মামলায় (সিরিজ) রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি মামলায় চারটি করে ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণার দিনে ৭/১৭ নম্বর মামলার ৪০৯ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, একই মামলার ৪৬৭ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪৬৮ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও চার হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪৭১ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। 

অর্থাৎ একটি মামলায় তাকে ২২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৪ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৯ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। এভাবে ৯/১৭ ও ১০/১৭ নম্বর মামলার ধারাগুলোতে একই পরিমাণ সাজা প্রদান করেন বিচারক। অর্থাৎ তিন মামলায় ৬৬ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৭২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫৭ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

এছাড়া, ৮/১৭ নাম্বার মামলার ৪০৯ ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড, একই মামলার ৪৬৭ ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দু’হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দু’মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪৬৮ ধারায় দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দু’হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দু’মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪৭১ ধারায় দু’বছরের বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দু’হাজার টাকা জরিমানা ও দু’মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

অর্থাৎ এ মামলায় ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৯ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

সর্বশেষ, ১১/১৭ নম্বর মামলায়ও চারটি ধারায় একই আদেশ দেন। অর্থাৎ এ দুটি মামলায় ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের পিপি আশরাফুল আলম বিপ্লব জানান, এ পাঁচটি মামলার পৃথক ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দু’টি আদেশে মোট ৮৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৯৪ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৭৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এআরএস

Link copied!