আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৪:০১ পিএম
আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৪:০১ পিএম
কিশোরগঞ্জে এবার ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো চাষে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে এবার রেকর্ড পরিমান ধানের উৎপাদন হবে। এ বছর প্রায় ৭ লাখ ৩৭ হাজার ২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে আশা করা হচ্ছে।
শস্যভান্ডার খ্যাত হওর বেষ্টিত উপজেলা গুলোতে সবুজ মাঠ ভরে গেছে বোরো ধানের চাষে। কৃষকেরা ব্যস্ত ধানের ক্ষেত পরিচর্যায়। আগাছা পরিষ্কার, সার ছিটানো আর পোকা দমনে সমানে চলছে পরিচর্যা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী-এ চারটি উপজেলা হাওর অধ্যুষিত। হাওর অধ্যুষিত এ চার উপজেলায় মোট আবাদি জমি রয়েছে প্রায় এক লাখ হেক্টর। চলতি মৌসুমে ইটনায় বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর, মিঠামইনে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯০০ হেক্টর, অষ্টগ্রামে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ হাজার ১০০ হেক্টর, নিকলীতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর, হোসেনপুরে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৯৬০ হেক্টর, কিশোরগঞ্জ সদরে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ১৪০ হেক্টর, পাকুন্দিয়ায় বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ১০০ হেক্টর, কটিয়াদীতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৩১০ হেক্টর, করিমগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর, তাড়াইলে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ১০০ হেক্টর, বাজিতপুর বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ১০০ হেক্টর, কুলিয়ারচরে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৫০ হেক্টর ও ভৈরবে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২১০ হেক্টর।
হাওরের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, তাদের আবাদকৃত ধানের মধ্যে স্থানীয় জাত, উফসী এবং হাইব্রীড জাতের ধান রয়েছে। তবে এ বছর উফসী ও হাইব্রীড ধানের ব্যাপক আবাদ হচ্ছে।
জানা যায়, জেলার ১৩টি উপজেলার সবক’টিতেই বোরো আবাদ হলেও ভূ-প্রাকৃতিক কারণে হাওর অধ্যূষিত ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং নিকলী উপজেলায় সর্বাধিক পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদিত হয়। প্রাকৃতিক কোন দৈব-দুর্বিপাকে না পড়লে হাওরে প্রতি বছরই বাম্পার বোরো ফলনের সম্ভাবনা থাকে।
তবে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার মধ্যেও কৃষককে ফসল ঘরে না তোলা পর্যন্ত আতঙ্কে থাকতে হয়। আগাম বন্যা আর পাহাড়ি ঢলে প্রায় সময়েই মাঠভর্তি কৃষকের সোনালী ধান তলিয়ে যায়। এত ঝুঁকির মাঝেও এখন হাওরের মাঠে সরব পদচারণায় মুখর কৃষকের একটাই চিন্তা, এক খন্ড জমিও যেন কোন অবস্থাতেই পতিত না থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুস সাত্তার জানান, এ বছর কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আশা করি সরকার থেকে যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে তার চেয়ে বেশি ফলন আমরা পাব।
কেএস