মার্চ ৪, ২০২৩, ০৩:৩৭ পিএম
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, এই প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। আমরা যে যেখানে যেই কাজই করি না কেন একমাত্র লক্ষ্য হলো জনগণের সেবা করা।
শনিবার (৪ মার্চ) সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে আসা বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় তিনি এ কথা বলেন। এরপর আদালত প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণসহ জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে মতবিনিময় করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ন্যায়কুঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য সারা দেশে সরকার ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এছাড়া, দেশে ৬৪টির মধ্যে ৩৪টি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায়ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্মাণ করা হবে। মামলাজট নিরসনে পাঁচ হাজার বিচারক নিয়োগের জন্য প্রতিবছর ১০০ জনের বেশি বিচারক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় বিচারক সংকট নিরসনে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে। বিচারকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সময় অনুযায়ী অফিস করতে। তবে, কেউ যদি গাফিলতি করেন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ন্যায়কুঞ্জের কনসেপ্টটা আমরা ভাবনা চিন্তা করেই করেছি। এই আদালত, এই অফিস সবকিছুই জনগণের স্বার্থে, জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য মূলত এইগুলো তৈরি করা। সবার দায়িত্ব হচ্ছে জনগণ সব সেবা যাতে সহজভাবে পায়, স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে, এই চিন্তা থেকেই আমরা এই কনসেপ্টটা করি। গ্রামগঞ্জ ও দূর-দূরান্ত থেকে যেসব মানুষ আদালত চত্বরে আসেন, বিশেষ করে নারীদের বেশি সমস্যা পোহাতে হয়। অনেকে বাচ্চা নিয়ে আসেন আদালত চত্বরে, তাদের বসার জায়গা, পানি খাওয়া, টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। এই চিন্তা থেকে আমি শপথ নেওয়ার পরপরই মাননীয় প্রাধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করি, প্রত্যেক আদালত চত্বরে এরকম কোনো বিশ্রামগার করা যায় কিনা।
‘প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে বিজয় একাত্তর উদ্বোধনের দিন ওয়াদা করেন এটা করে দেবেন। সারাদেশে বিচার পেতে আসা মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এই বিশ্রামগার `ন্যায়কুঞ্জ` করার জন্যে ইতোমধ্যে ৩৫ কোটি টাকা বাজেট হয়েছে। দেশের প্রতিটি আদালত চত্বরে এই ন্যায়কুঞ্জ হবে।’
চুয়াডাঙ্গায় মামলার জট বেড়েই চলেছে এই প্রসঙ্গে সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, গত সুপ্রিম কোর্ট দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আমরা বলেছি, এতোদিনে যে মামলা জট হয়েছে, এই জট কমাতে আরও প্রায় ৫ হাজার জুডিসিয়াল অফিসার দরকার। আমি আসার পরপরই একটি সার্কুলার ইস্যু করি, পুরনো মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পতির ব্যবস্থা করি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা শুনলে খুশি হবেন, সারাদেশে গত এক বছরে ডিসপোজালের রেট আগের বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আমাদের যে কয়জন অফিসার আছেন তারা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু মামলার জট কয়েকজন অফিসার দিয়ে শেষ করা সম্ভব না। আমরা চেষ্টা করব আরও অফিসার চুয়াডাঙ্গাতে দেওয়ার জন্য।
এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম, জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার এবং জজকোর্ট ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন।