Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে ছাগল পালনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

এপ্রিল ৩, ২০২৩, ০৫:০৮ পিএম


কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে ছাগল পালনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

বাংলাদেশের উত্তর জনপদের জেলা কুড়িগ্রাম। জেলায় ১৬টি নদী প্রবাহিত হওয়ায় এখানে প্রায় চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চর রয়েছে। বর্তমানে চৈত্র মাসে অধিকাংশ নদী নাব্যতা হারিয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। চরাঞ্চলের নদীর অববাহিকায় ছাগল পালন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

নদী তীরবর্তী এলাকার নারী-পুরুষ ছাগল পালনে আগ্রহী হঠে কারণ ছাগলকে খাওয়ার কোন খরচ লাগে না। চরের বেশিরভাগ মহিলারাই তাদের নিজ নিজ পরিবারের ছাগল পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এখানকার প্রায় বাড়ির পুরুষ অন্য জেলায় কাজের জন্য যায়। আর বাড়িতে মহিলারা বিভিন্ন সবজি চাষ,হাঁস-মুরগী ও গরু-ছাগল পালন করে থাকেন। 

এই চরগুলোতে সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন সংস্থা (এনজিও) প্রশিক্ষণসহ শাক, সবজি বীজ, হাঁস-মুরগী, ছাগল ও গবাদি পুশু সহায়তা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় সরকারের পল্লী উন্নয়ন একাডেমির অর্থায়ণে ‘এমজেএসকেএস’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা প্রান্তিক কৃষকের পাশাপাশি চরের মানুষের উন্নয়নে চর এলাকায় কার্যক্রম শুরু করে। সংস্থাটি সহযোগীর পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি -বেসরকারি ও সংস্থার সাথে পরিষেবা পেতে সংযোগ করে।

চরের এক গৃহবধু মাজেদা (২০) এক ছেলের মা, স্বামী স্ত্রীকে রেখে কাজের সন্ধানে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেলে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর চর এলাকায় বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। গৃহবধু মাজেদা এনজিও থেকে সহায়তা পেয়ে মাত্র চার বছর আগে ৪ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনেছিলেন। বর্তমানে তার ছাগল বেড়ে ১২টি হয়েছে। এদিকে ছাগল বিক্রি করে ত্রিশ হাজার টাকাও পেয়েছেন। তার কিছু জাতের ছাগল বছরে তিনবার বাচ্চা প্রসব করেছে। প্রতিবার প্রসবে ৩-৪ টি বাচ্চা পেয়েছে। 

মাজেদা বলেন, চর এলাকর ঘাস ছাড়া ওই বাচ্চাদের জন্য কোনো অতিররিক্ত খরচের প্রয়োজন হয় না। মাজেদার মতো আরোও অনেক নারী চরাঞ্চলে ছাগল পালন করে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। একই চরের জোৎসনা বেগমের ১১টি ছাগল,মাহবুবা বেগমের ৯টি,আলেয়ার ৯টি এবং জোবেদ আলীর ৮ টি ছাগল রয়েছে। তারা বলেন, প্রতিবছর বন্যা এলে ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। এর ফলে গৃহপালিত পশুসহ ছাগল অসুস্থ্য হয়, একসময় মারা যায়। তবে এখন আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি। বাঁশের মাচা দিয়ে উঁচু স্থানে ছাগল পালন করছি, বন্যায় বড়ি তলিয়ে গেলেও কোন সমস্য হবে না।

সুইস কন্টাক্টের জেলা সমন্বয়ক ফরহাদ হোসেন বলেন, চরাঞ্চলে পশু চাষ ও লালন- পালনের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অ.দা.) ডাঃ মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, চরাঞ্চলের গৃহপালিত গবাদি পশু থেকে দুধ ও অন্যান্য ভিটামিনের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারের সকল সেবা প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে পৌঁছে দিতে আমরা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। আমরা গবাদি পশু পালন,ছাগল পালনে রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সহ সবধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকি।
 

Link copied!