Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সালথায় পুলিশের পিটুনিতে আহত দুই কৃষক হাসাপাতালে

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

এপ্রিল ৫, ২০২৩, ০১:৩৯ পিএম


সালথায় পুলিশের পিটুনিতে আহত দুই কৃষক হাসাপাতালে

ফরিদপুরের সালথায় বিনা ওয়ারেন্টে রাস্তা থেকে আটক করার পর থানায় নিয়ে দুই কৃষককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

আদালত থেকে জামিন পেয়ে আহতাবস্থায় ওই দুই কৃষককে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত ওই দুই কৃষকের নাম মৃত আব্দুল ওসমান খানের ছেলে আব্দুল হক খান (৭০) ও মৃত আফতাব মোল্লার ছেলে আব্দুল কুদ্দুস মোল্লা (৬৫)। তাদের বাড়ি সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বাইলা গ্রামে। এদের মধ্যে আব্দুল হকের স্ত্রী ও ৪ ছেলে এবং কুদ্দুস মোল্যার ৩ ছেলে রয়েছে ৷ তারা দু‍‍`জনেই কৃষক। এদের মধ্যে কুদ্দুস মোল্লা সারাদিন রোজা রেখে মাঠ থেকে বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পেঁয়াজ তুলে ইফতারির পরে শোরগোল শুনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন। 

রোববার (২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 
আহত কৃষক কুদ্দুস মোল্লা বলেন, ইফতারির পরে আমাদের গ্রামের পাশের পাড়ায় গন্ডগোল হয়। আমি ওই হট্টগোলের শব্দ শুনে কি হচ্ছে দেখতে বের হলে আমাকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর গারদ খানার মধ্যে চিৎ করে শুইয়ে দিয়ে থানার ওসি বেদমভাবে পেটায়। কুদ্দুস মোল্লা বলেন, আমি তাদের অনেক অনুনয়-বিনয় করেছি যে, আমি সারাদিন রোজা রেখে পেঁয়াজ ক্ষেতে কাজ করছি। খাটুনির শরীর আমার। আমাকে মাইরেন না। তারপরেও শুনেনি তারা।

আব্দুল হক খান বলেন, থানায় নিয়ে প্রথমে এসআই মিজান দেয়ালের সাথে বুক মিশিয়ে হাত উপরে দিয়ে পেছনে মারতে থাকে। আমি এভাবে দাড়ায় থাকতে পারতেছিনা বললে তাকে আউরাকাউরা পেটাবে বলে হুমকি দেয়। এরপর গারদের মধ্যে ঢুকিয়ে সেখানে চিৎ করে শুইয়ে পিছানে পেটানো হয়। মারতে মারতে আধমরা করে ফেলে রাখে।

তারা জানান, তাদের সাথে সাত-আটজনকে আটক করে যাদের মধ্যে চৌদ্দ-পনের বছরের চারজন কিশোরও ছিলো। তাদের সকলকেই পেটানো হয়। তাদের আর্তচিৎকারে ভারী হয়ে উঠে সেখানকার পরিবেশ। তবু তারা নির্বৃত্ত হয়নি।

এদিকে, সেহরির সময় তাদের মধ্যে কারা রোজা রাখবে জিজ্ঞাসা করলে চারজন রোজা রাখবে বলে জানায়। তাদেরকে সেহরির জন্য ইফতারির সময় রান্না করা আলা হয়ে যাওয়া (ঘেমে ওঠা) খিচুড়ি খেতে দেয় বলেও তারা অভিযোগে জানায়। আব্দুল হক বলেন, দিনভর রোজা, ইফতারি করি নাই। সেই অবস্থায় আমাগে ধইর‌্যা নিছে। তারপর সেহরির সময় আলা খিচুড়ি খাবার দিছে। আর কিছু দেয় নাই।

এদিকে, থানায় এভাবে মারপিটের পরে একথা কোর্টে না বলার জন্য হুমকি দেয়া হয় বলে তারা জানান। অন্যথায় আবার ধরে এনে তাদের মারপিট করা হবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

এব্যাপারে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, সেখানে ওইদিন রাতে দুজন নারীকে মারপিট ও কোপানো হয়েছে। একজন ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছে। দুটি বাড়ি ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় অন দ্য স্পট আমরা তাদের আটক করে দ্রুত বিচার মামলায় তাদের কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। এরবেশি কিছু না। আর সেহরির সময়েও তাদের নষ্ট খিচুড়ি খাওয়ানোর অভিযোগও সঠিক নয়। ওসি বলেন, আটক হলেও তাদের মানবাধিকার রয়েছে। কোর্ট বিচার করবে তারা আসামি কিনা।

এমএইচআর

Link copied!