Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫,

নানির কোলে ৬ মাসের মুক্তা

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

এপ্রিল ১৯, ২০২৩, ১২:২৭ পিএম


নানির কোলে ৬ মাসের মুক্তা

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। তাই নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন হোক সকলেরই প্রত্যাশা। আর সেই আশা-প্রত্যাশার মধ্য দিয়ে ঘটে যায় নানান দুর্ঘটনা। ঠিক তেমনি ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৬ মাস বয়সি মুক্তা আক্তার নামে এক শিশুর জীবনে নেমে আসে দু:খের ছায়া।

সড়ক দুর্ঘটনায় তার মা বৃষ্টি আক্তার (২১) ও তার দাদি জহুরা খাতুন (৫০)কে হারিয়ে এখন নানির কোলে তার আশ্রয়ের নীড়।

জানা যায়, শিশু মুক্তা নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা গ্রামের প্রবাসী উজ্জল মিয়ার একমাত্র সন্তান। ঈদের পরপরই ফের বিদেশে যাওয়ার কথা। এরপূর্বে ঈদের সকল কেনা-কাটা শেষ করেছিলেন তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার।

স্বামী, সন্তান ও পরিবারকে নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে নতুন জামাকাপড় তুলে রেখেছিল আলমারিতে। ঈদের তা পড়ে প্রথম শিশু সন্তান মুক্তাকে নিয়ে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল মুক্তার মা।

তবে, সেই নতুন জামা-কাপড় আর পড়া হলো না। মুক্তার সর্দি-জ্বরের চিকিৎসার জন্য সন্তান ও শ্বাশুড়ি জহুরা খাতুনকে নিয়ে স্থানীয় বাজারে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন বৃষ্টি আক্তার। তবে সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরা হলো না, পথিমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মুক্তা ছাড়া প্রাণ হারায় তারা দুজন।

জানা যায়, গত সোমবার (১৭ই এপ্রিল) ইফতার পূর্ব নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা নামক ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে ইজিবাইজ ও মাইক্রোবাস সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে আল্লাহর অশেষ কৃপায় ভাগ্যবশত বেঁচে যায় শিশু মুক্তা। ইজিবাইকটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলেও মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয় জনতা তাদেরকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখানে বউ ও শ্বাশুড়িকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে শিশু মুক্তা অরণ্যপাশা গ্রামের নানা সোনার মিয়ার বাড়িতে সুস্থ আছে। তবে এমন শিশুর মা না থাকায় তাকে লালন-পালনে কিছুটা কষ্ট হলেও সম্পূর্ণ ভার নিয়েছেন তার নানি।

জহুরা খাতুনের ভাই ফজলু মিয়া ও বৃষ্টির পিতা সোনা মিয়া জানান, ময়না তদন্ত ছাড়াই তাঁরা লাশ দাফনের অনুমতি পেয়েছেন। তবে মেয়েকে হারানোর কষ্ট সইতে পারছেন না। মেয়ের এরকম অকাল মৃত্যুতে যেন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলছেন তিনি। মুখ থেকে কোন বাক্য নি:সৃত হচ্ছেনা। তবে বারংবার নাতনি শিশু মুক্তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন।

নান্দাইল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শফিউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই দুজনের লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে মাইক্রোবাসটির কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এআরএস

 

Link copied!