ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি
এপ্রিল ৩০, ২০২৩, ০৬:১৭ পিএম
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি
এপ্রিল ৩০, ২০২৩, ০৬:১৭ পিএম
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্ত এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ে চলতি বোর ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। এতে সীমান্ত এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ও ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
যে সমস্ত সীমান্ত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে গান্ধীগাও, গুরূচরম দুধনই, আয়নাপুর, পানবর, কর্ণজোড়া ও বালিজুরিসহ আরো অনেক এলাকা।
প্রচণ্ড বাতাসে গাছপালা ও বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে কৃষকেরা শিলাবৃষ্টির ভয়ে আতঙ্কিত। উঠতি বোর ফসল যদি শিলাবৃষ্টির কারণে কাটতে না পারে তাহলে দরিদ্র প্রান্তিক চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে।
অনেক দরিদ্র কৃষক ঋণ করে চলতি বোর চাষাবাদ করেছে। আর এ ফসল যদি ক্ষতির মুখে পড়ে তাহলে কৃষকের আর কোন উপায় নাই।
উল্লেখ্য ঝিনাইগাতী উপজেলার অধিকাংশ পরিবারের আয়ের উৎস কৃষি ফসল। এ কৃষি ফসল উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে বাড়তি ফসল বাজার বিক্রি করে থাকে। যা দেশের খাদ্য চাহিদায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে।
বর্তমানে উঠতি বোর ফসল কাটা মাড়াইয়ে শ্রমিক সংকট চলছে। এরমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বোর কর্তনের শুরুর দিকে প্রতিজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ছিল ৭ থেকে ৮শ` টাকা।
বর্তমানে এক হাজার টাকা প্রতি জন শ্রমিকের মজুরি। এছাড়া চুক্তিতে প্রতি একর বোর কর্তন ছিলো ৮ হাজার টাকা। বর্তমানে ১২ হাজার টাকা প্রতি একর বোর কর্তনের শ্রমিক মূল্য। মাড়াই ছিলো ২ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতি একর জমির ফসল মাড়াই ৩ হাজার টাকা। এক একর জমি বোর ফসল কাটা ও মাড়ায়ে দিতে হচ্ছে ১৫ হাজার টাকা। চরতি বছর প্রতি একর বোর চাষে খরচ হয়েছে ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।
বর্তমানে ধানের মূল্য প্রতি মন ৮০০ টাকা। তাতে কৃষকের বোর চাষের লাভের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এরপর যদি তাদের ফসল কেটে ঘরে তুলতে না পারে তাহলে কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই এলাকার কৃষকদের দাবি সরকারিভাবে ধান কাটা মাড়ায়ে হারভেস্টর মেশিনের সহযোগিতা জরুরি।
যদি সরকারি ভাবে এই বোর ধান কর্তনে সহায়তা করা হয়। তাহলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই উঠতি বোর ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারবে। বর্তমানে শ্রমিক সংকটে তারপর কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টির আতঙ্কে কৃষক দুশ্চিন্তায় আছে।
এমনিতেই বোর উৎপাদনে কৃষকের লাভের বালাই নাই। তারপর যদি এ ফসল কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়। তাহলে কৃষকের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। তাই কৃষক ও ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বা হারভেস্টর মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা মাড়িয়ে ব্যবস্থা নিবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার হুমায়ুন দিলদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। অর্থাৎ বাহিরের এলাকা থেকে ঝিনাইগাতীতে ধান কাটা মাড়ায়ে হারভেস্টর মেশিন সংগ্রহের উদ্যোগ নিবেন। যদি এটি করা হয় তাহলে শ্রমিক সংকট দূর হবে পাশাপাশি কৃষকদের ধান কাটার সমস্যাও দূর হবে। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবে ঝিনাইগাতী উপজেলার দরিদ্র প্রান্তিক বোর চাষিরে।
এআরএস