Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

ছাইয়ে ভরাট হচ্ছে খাল, হুমকীর মুখে কৃষি জমিসহ পরিবেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মে ১০, ২০২৩, ০৭:০৬ পিএম


ছাইয়ে ভরাট হচ্ছে খাল, হুমকীর মুখে কৃষি জমিসহ পরিবেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নিয়ম নীতির কোনরকম তোয়াক্কা না করে আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস, আলম এগ্রোফুড নামের দুটি স্থানীয় ডায়ার মিল (বয়লার) পরিবেশের ক্ষতি করে দেদারসে চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

সে সাথে তাদের মিলের কালো ধূয়ার সাথে উড়ন্ত ছাই ও দূষিত কালো পানিতে মিশ্রিত ছাইয়ে মিল ঘেঁষা খাল ভরাট হওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে ওই মিলগুলোর পাশে থাকা জমির ধান এখন হুমকীর মুখে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ডায়ার মিল দুটি অন্যত্র সড়িয়ে নিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ আবেদন জানিয়েছে গ্রামবাসী।

গ্রামবাসীর দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা গ্রামে আবাসিক এলাকায় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস, আলম এগ্রোফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (ব্রয়লার) মিল স্থাপন করা হয়েছে।

 

যা পরিবেশ সম্মত না হওয়ায় মিল থেকে উড়ন্ত ছাই ও ধূলো বাতাসের সাথে উড়ে গ্রামবাসীর জন জীবনে অসুবিধার সৃষ্টি করছে। এতে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। 

এছাড়াও মিলের গরম পানি ও ছাই পাশ^বর্তী খালে প্রবাহিত করায় খাল ভরাট হয়ে খালটি দিয়ে এখন কোনভাবেই পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। এতে করে মিলের গরম পানি ও ছাইয়ের কারণে কৃষি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। 

গ্রামবাসী বিষয়টি মিল মালিকদের বার বার জানালেও তারা তাতে কোন কর্ণপাত করেনি। বরং উল্টো গ্রামবাসীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী ধামকী প্রদান করে বে-আইনীভাবে মিলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। 

সরজেমিনে খড়িয়ালা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধানি জমির পাশেই রয়েছে একটি সরকারি খাল। এর পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ওই মিল। মিলের পেছন অংশে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খালটি পোড়া ধানের কালো ছাইয়ের স্তূপ জমে ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে কৃষকরা জমি চাষের সময় খালের পানি ব্যবহার করতে পারছেনা। এছাড়াও মিলের চিমনি দিয়ে অনবরত নির্গত হচ্ছে কালো ধূয়া।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ফরিদা বেগম জানান, তিনি ৩৭ শতক জমিতে ধানের চাষ করেছিলেন কিন্তু মিলের ছাইয়ের কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু তার জমিই নয় খালের পাশে থাকা অনেক জমির ধান এখন হুমকীর মুখে। তিনি আরো জানান, এখানে একটি ডোবা রয়েছে সেখানে চাষের জন্য মাছ ফেলা হলে সেগুলো মারা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব মিয়া জানান, মিলের কালো দূষিত ধূয়ার কারণে গ্রামের মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। সাদা কাপড় পড়ে থাকা যায়না। এছাড়া সরকারি যে খালটি ছাইয়ের কারণে ভরাট হয়ে গেছে সেটি মেঘনা নদীর সাথে সংযুক্ত। কিন্তু ভরাটের কারণে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই।

মো. ফয়সাল জানান ছাই এবং দূষিত পানিতে খালটির এখন করুণ অবস্থা। কৃষকরা জামি চাষ করার জন্য খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এতে করে জমিগুলো এখন নষ্ট হওয়ার পথে। আমরা খালটিকে পুণরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস, আলম এগ্রোফুড এর মালিক আলম মিয়া জানান, আশুগঞ্জে ৪০টি ডায়ার মিল রয়েছে। আমরা এই সমিতির আওতাভূক্ত। আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র আছে। আমরা পরিবেশের সকল আইন কানুন মেনেই মিল পরিচালনা করছি। তারা অন্য বিরোধের জের ধরে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. খালেদ হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের হাতে একটি অভিযোগ এসেছে। দ্রুত সরজেমিনে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।  

এইচআর

Link copied!