Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪,

দাকোপে দলিত শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণ

দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি

দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি

মে ১৬, ২০২৩, ০৭:২৭ পিএম


দাকোপে দলিত শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণ

খুলনার দাকোপে প্রথম শ্রেনী থেকে দশম শ্রেনীর ১৯ শত ৮৮ জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং খেলাধুলা সামগ্রী করা হয়েছে। 

দাতা সংস্থা এফএডিভি এর অর্থয়নে দলিত সংস্থা স্ট্রেনদেনিং হেলথ এন্ড এডুকেশন অব চিলড্রেন এন্ড দেয়ার ফ্যামিলিস অব সুন্দরবনস্ ইন বাংলাদেশ ২ বছর মেয়দী প্রকল্পের আওতায় গত ৮ থেকে ১৬ মে, দাকোপ উপজেলার ৭ টি গ্রাম (চালনা, তিলডাঙ্গা, কালীনগর, ধোপাদি, বুড়িরডাবর, লাউডোব, ঢাংমারী এবং আশাশুনি উপজেলার ৮ টি গ্রামে (বড়দল, বুড়িয়া, বামনডাঙ্গা, শীতলপুর, তুয়াডাঙ্গা, খাজরা, গদাইপুর এবং জামালনগর) প্রথম থেকে দশম শ্রেনীর ১৯৮৮ জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। শিক্ষা উপকরনের মধ্যে খাতা, কলম, পেনসিল, ইরেজার এবং পেসিল কাটার বিতরণ করা হয়। 

স্বাস্থ্য উপকরণের মধ্যে সাবন, টুথ ব্রাশ, টুথ পেস্ট, নেল কাটার, তেল এবং ৩৪৯ জন কিশোরী মেয়েদের মধ্যে স্যানেটারী নেপকিন বিতরণ করা হয়। শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য ১৫ টি দলিত স্কুলে খেলাধুলা সামগ্রী ফুটবল, ভলিবল, ক্যারাম বোর্ড, দড়ি লাফানো, ক্রিকেট ব্যাট-বল, দাবা ও লুডু, ২টি হারমোনিয়াম , ২ সেট তবলা বিতরণ করা হয়।  উক্ত বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, রেভা: ফাদার জন ললিত বিশ্বাস -চালনা মিশন, ইউনিয়ন পরিষেদের চেয়ারম্যান, সদস্যগন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন বর্মন, সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক,এ এইচ, ফারুক প্রকল্প মোবিলাইজারগন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ এবং  স্কুল এডুকেশন কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 প্রকল্প ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন বর্মন সূত্রে জানাযায়,দলিত সুবিধাবঞ্চিত এ শ্রেণীর জনগোষ্ঠির মধ্যে শিক্ষার হার খুবই কম এবং তাদের সামাজিক অবস্থানও অনান্যদের তুলনায় একেবারে নিচে। তাদের অধিকাংশ লোকের বসবাস প্রাকৃতিক দূর্যোগ কবলিত ও উপকূলীয় এলাকায়। প্রকল্প এলাকার শিক্ষার হার ৪৬% প্রায় এর মধ্যে সংখ্যালঘু দরিদ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে এ হার ৩০% ভাগেরও কম। দরিদ্র পরিবারের শিশুরা পেশাগত কাজে মা-বাবাকে সাহায্য করা সহ ১৪-১৫ বছর বয়স থেকে তারা পরিবারের আয়-রোজগারে নিয়োজিত হয়ে থাকে। দলিত পরিবার গুলোতে বাল্য বিবাহ এবং স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ার হার সবচেয়ে বেশী। 

অধিকাংশ মেয়ে শিশুদের ১৮ বছরের আগে  বিয়ে দেওয়া হয় যার ফলে পরিবার গুলোতে মা ও শিশু উভয়ই অপুষ্টিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এই দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ প্রাথমিক পর্যায়ে সমাজের নিম্ন আয়ের বিচিত্র পেশা বেছে নেয় তাদের আয়-রোজগারের জন্য যেমন-নরসুন্দর, জুতো সেলাই কাজ, পরিচ্ছন্ন কর্মী, ক্ষুদ্র ব্যবসা, শুকর পালন, দিন মজুর, মৎস্য শিকার, হস্তশিল্প এবং ভ্যান গাড়ি চালানো ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আর্থিক অভাব-অনটন ও পশ্চাৎপদ মনোভাবের কারনে এই শ্রেণীর মানুষেরা সব ধরনের সেবা ও সামাজিক অধিকার বঞ্চিত। তাই সমাজের দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে শিশু অধিকার, শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

আরএস


 

 

Link copied!