Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

দাবদাহ-লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে চরাঞ্চলের মানুষ

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

জুন ৮, ২০২৩, ০৪:৪৪ পিএম


দাবদাহ-লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে চরাঞ্চলের মানুষ

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে দাবদাহের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস ওঠা মানুষ এখন বার বার বিদ্যুতের সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। দিনে সূর্যের তেজ আর রাতে ভ্যাপসা গরমে অসহনীয় অবস্থায় সময় পার করছে মানুষ। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে খেটে খাওয়া মানুষ কখনো একটু সুযোগ পেলেও বৈদ্যুতিক পাখার বাতাস থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিকে লোডশেডিংয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রচণ্ড দাবদাহ আর দিনের বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকায় বেচা-বিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় উপজেলাজুড়ে বারবার লোডশেডিং চলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নাগরপুর ও চৌহালী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস।

জানা গেছে, দেশের দুর্গম ঘোষিত সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা। টাঙ্গাইল এর নাগরপুর  জোনাল অফিসের আওতাধীন চৌহালীতে প্রায়  ১৮ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। এছাড়া ছোট বড় চার থেকে পাঁচটা কারখানাও রয়েছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে চৌহালীতে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে  জনপদ জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের সঙ্গে প্রাণিকূলের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। 

চৌহালী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ  মাজেদুর  রহমান জানান, উপজেলায় গত কয়েক দিন সর্বোচ্চ ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন বিভাগ সূত্রে জানা যায়,  টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুতের নাগরপুর জোনাল অফিস রয়েছে যেখান থেকে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়।

প্রচণ্ড এ গরমে সবচেয়ে বিপদে আছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। রোদে তাকালেই চোখ যেন ঝাপসা হয়ে আসে। টানা গরম আর অনাবৃষ্টিতে মানুষের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রাকৃতিক বাতাসেও গরম হাওয়া বের হচ্ছে। এর মধ্যে মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে এসেছে ঘন ঘন লোডশেডিং। লোডশেডিং হলে বাসার মধ্যে যেন দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বেশি। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। 

বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার দিনে কমপক্ষে ৮ বার লোডশেডিং হয়েছে বলে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানায়। জানা যায়, ভয়াবহ এই লোডশেডিংয়ে বিপাকে বৃদ্ধ এবং শিশু। এছাড়া এই গরমে শিশুরা সর্দি-কাশিসহ  ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

চৌহালী থানার  ভারপ্রাপ্ত  অফিসার  ইনচার্জ  ওসি হারুন অর রশিদ জানান,  প্রতিদিন ৫/৭ বার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবার দেড় দুই ঘন্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না।

এ ব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ নাগরপুর অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মেজবাউল হক আরও জানান, তার অফিসের আওতায় ৯৬ হাজার গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৪৫ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে লোডশেডিং কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

পল্লীবিদ্যুৎ নাগরপুর অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মেজবাউল হক জানান, প্রচণ্ড দাবদাহে সারাদেশে লোড বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সর্বোচ্চ লোড চলছে। তার অফিসের আওতাধীন বেশকিছু মুরগীর খামার রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা ৩৫ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট৷

 এদিকে চৌহালী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহীর অফিসার ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিং আমার দপ্তরসহ বেলকিছু দপ্তরের কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে ৷ পাশাপাশি কৃষি ও চরাঞ্চল হওয়া এ উপজেলায় অধিকাংশ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল হওয়া লোডশেডিংয়ের কারনে তারাও বাধাগ্রস্ত ৷ উপর মহলে চিঠি দিয়েছি আশাকরি দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে ৷

এআরএস

Link copied!