Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৪,

২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ!

মঠবাড়িয়ার সাবেক ওসির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

জুন ১৫, ২০২৩, ০৮:৪২ পিএম


মঠবাড়িয়ার সাবেক ওসির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি ও ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের অপরাধ বিভাগের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) সৈয়দ আব্দুল্লাহ এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিরোজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি সৈয়দ আব্দুল্লাহ ছাড়াও তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও শাশুড়ি কারিমা খাতুনকে আসামি করা হয় মামলায়। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে বলা হয়, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি ও বর্তমানে ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের অপরাধ বিভাগের ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৫৬), তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার (৪৫) এবং শাশুড়ি কারিমা খাতুন (৬২) অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখে এবং অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন ও ছদ্মাবৃত্ত করা তথা মানি লন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা ও দন্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪২০/১০৯ ধারা ও দূর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২), ৪ (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এজাহারে আরও জানা যায়, আসামি সৈয়দ আব্দুল্লাহ নিজ নামে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটিতে ছয় কাঠা করে দুটি মোট ১২ কাঠার প্লটের জন্য আবেদন করেন। এখন পর্যন্ত যার পরিশোধিত মূল্য ৪০ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা।

সৈয়দ আব্দুল্লাহর শাশুড়ি কারিমা খাতুনের নামে গুলশানে ৩৯০৯ বর্গফুটের ফ্ল্যাট (যার মূল্য মোট ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা) কেনার জন্য চুক্তি করেন। ফ্ল্যাট বুকিং ও প্রাথমিক চুক্তিতে কারিমা খাতুনের নাম থাকলেও ওই ফ্ল্যাটের মূল্য ও আনুষঙ্গিক বাবদ প্রিমিয়ার ব্যাংক গুলশান তেজগাঁও লিংক রোড শাখায় আসামি সৈয়দ আব্দুল্লাহর স্ত্রী ফারহানা আক্তারের হিসাব নম্বর থেকে ৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড গুলশান তেজগাঁও লিংক রোড শাখায় ফারহানা আক্তারের স্পার্ক এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানির চলতি হিসাব থেকে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা নাভানা রিয়েল এস্টেট বরাবর পরিশোধ করা হয়।

আব্দুল্লাহ তার স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে কাকরাইলে ২১২০ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্পেস ও ২৬৬ বর্গফুটের গাড়ি পার্কিংসহ মোট ২৩৮৬ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্পেস ২ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার টাকায় কেনেন। ফারহানা আক্তারের নামে ঢাকা মহানগরীর রমনায় ২১৫০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট ও কার পার্কিং স্পেস কিনেছেন আব্দুল্লাহ, যার মূল্য ২ কোটি ৭৩ লাখ চার হাজার ২৩২ টাকা।

এছাড়াও ফারহানার নামে খিলগাঁওয়ে পুলিশ প্রজেক্টে ২০০০ বর্গফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ও ২০০ বর্গফুটের গ্যারেজ কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক, যার নির্মাণ খরচ বাবদ ৪০ লাখ টাকার বেশি ব্যয় করেছেন আব্দুল্লাহ। তিনি নিজ নামে দুটি প্লট, স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট, একটি বাণিজ্যিক স্পেস ও শাশুড়ি কারিমা খাতুনের নামে একটি ফ্ল্যাট কেনা বাবদ ১৫ কোটি সাত লাখ ৬৬ হাজার ৪১৫ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ অর্জন করেন।

দুদক বলছে, সৈয়দ আব্দুল্লাহ প্রতারণার উদ্দেশ্যে তার স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে দুটি এনআইডি কার্ড বানান। আব্দুল্লাহ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত হিসাব খোলা এবং ওই হিসাবগুলোতে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫৪ টাকার আমানত গচ্ছিত রাখার তথ্য, বিভিন্ন ব্যাংকে দুটি এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে ১ কোটি টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ফারহানা আক্তারের নামে ৩ কোটি ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ কেনার তথ্য পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) সৈয়দ আব্দুল্লাহ এর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আরএস

 

 

Link copied!