মো: হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
জুলাই ১০, ২০২৩, ০৩:০৩ পিএম
মো: হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
জুলাই ১০, ২০২৩, ০৩:০৩ পিএম
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট। এ উপজেলার একটি পৌরসভা এবং ১৩টি ইউনিয়ন মিলে অন্তত ৬ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার ভরসারস্থল একমাত্র কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশা।
হাসপাতালে অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন এলাকাবাসী।
এর আগে গত( ২৮ জুন) হাসপাতালের অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে এবং জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য হাসপাতালে ২৪ ঘন্টা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করার দাবীতে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে কয়েক শতাধিক লোক মানববন্ধন করেছেন।
এরপর (৪ জুলাই) কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালের এক শ্রেণির কর্মচারীদের দুর্নীতি, অব্যবস্হাপনা ও অচলাবস্থা দূর করতে উপজেলার চিরাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, মামুনুল কবীর খান (হলি), বাসক কেন্দুয়া শাখার সভাপতি শাহ আলী তৌফিক ও কেন্দুয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস কাঞ্চন ফেরদৌসসহ উপজেলা সর্বস্তরের মানুষের পক্ষে ৭ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দাখিল করেন তারা।
দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বিচার করা, ২৪ ঘন্টা এম্বুলেন্স সার্ভিস নিশ্চিতকরণ, রোগী হয়রানি বন্ধকরণ, ডায়াগনস্টিক যন্ত্রপাতি (বিশেষ করে ইসিজি, এক্সরে,আলট্রাসনোগ্রাম) সচল করা, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ এবং ব্লাড ট্রান্সমিশনের ব্যবস্হা করা, রোগীদের খাবারের মান উন্নয়ন ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্হা, হাসপাতালে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ ৫০ থেকে ১শত বেডে উন্নীতকরণ।
এমন অভিযোগ উপজেলার অনেক মানুষের। তাদের দাবী খুব দ্রুত এ হাসপাতালে কমপক্ষে দুটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হোক।
জানা যায়, জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য হাসপাতালে দু`টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও একটি নষ্ট হয়ে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। অপরটি সচল থাকলেও রোগীদের ভাগ্যে জুটে না। এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি তেল বাবদ লক্ষাধিক টাকা বাকি রয়েছে।
এ অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জরুরি সেবা প্রত্যাশী রোগীরা। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় জরুরি রোগীদের বেশি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়া বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি বা মাইক্রোবাস ভাড়া করে ময়মনসিংহ - ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এম্বুলেন্স না পাওয়ায় অনেক রোগী হাসপাতালে পৌঁছার আগেই পথে মারা যান।
উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের কুন্ডলী গ্রামের এক ভুক্তভোগী বলেন,তার বাবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার পরামর্শ নেন ময়মনসিংহ নিয়ে যেতে। পরে অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে সিএনজি করে ময়মনসিংহ নিতে হয়েছে। এতে করে টাকা যেমন বেশি খরচ হয়েছে। তেমনি সময় বেশি লেগেছে। রোগীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ময়মনসিংহ নিতে হয়েছে।
কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডাঃ এবাদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরডাক্তার, নার্স সবাই দায়িত্বশীল। প্রতিটি রোগীদের আন্তরিকতার সাথে সেবা দেয়া হয়।
তাছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অ্যাম্বুলেন্স সচল আছে। বর্তমানে জ্বালানি খরচ বাবদ প্রতি মাসে ১৫ ট্রিপ বরাদ্ধ আছে। শুধু মুমূর্ষু রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকে। রোগীদের ট্রিপ ভাড়ার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে। এ টাকা থেকে খরচ করার কোন সুযোগ নেই। জ্বালানি তেলের বকেয়া অনেকটাই পরিশোধ করা হয়েছে। আরো কিছু বকেয়া রয়েছে । আশা করি বরাদ্ধ এলেই জ্বালানি তেলের বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হবে।
আরএস