Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সৈয়দপুরে গাভী পালনে সফল খামারি, মাসে দেড় লাখ টাকা আয়

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

জুলাই ১৭, ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম


সৈয়দপুরে গাভী পালনে সফল খামারি, মাসে দেড় লাখ টাকা আয়

চাষাবাদ ও পুষ্টি চাহিদা মেটাতে গাভী প্রতিপালনে বাড়িতেই ডেয়রী ফার্ম গড়ে স্বাবলম্বি হয়েছেন সৈয়দপুরের কৃষক রবিউল। তার দেখাদেখি অনেকে এখন এ পেশায় ঝুঁকছেন। এতে এ জনপদের মডেল খামারিতে পরিণত হয়েছেন এ কৃষক।

শহরের পৌর ১০ নং ওয়ার্ডের কাজিরহাট পশ্চিম পাড়ার কৃষক রুহুল হক। স্বাধীনতার পর ১০ সদস্যর সংসারের ভরন পোষন মেটাতে পরের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করতেন। ষাড়ের বদলে হাল টানতে ব্যবহার করতেন গাভীকে। চাষাবাদের পাশাপাশি পরিবারের সকলে যাতে দুধ খেতে পারে।

এমন উদ্দেশ্যে তৎকালীন সময়ে হাট থেকে ভারতীয় এক জোরা লম্বা এবং উচু গাভীসহ বকনা কিনেন। কৃষিতে নিজের চাহিদা মিটিয়ে হাল ও দুধ বিক্রির আয় দিয়ে ভালই কাটে প্রান্তিক কৃষকের দিন। ৬ ছেলে ৩ মেয়ের পরিচর্যায় দুই গাভী দিয়ে আসে সচ্ছলতা। এভাবে কেটে যায় ৪৮ বছর। ২০১৯ সালে রুহুল হকের মৃত্যু হলে পিতাকে অনুস্বরন করেন চতুর্থ সন্তান রবিউল হক (৫০)।

স্থানীয় ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে বাবার খামারটিকে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাগত সুবিধায় রনি ডেয়রী ফার্ম নামে শুরু করেন দুধের ব্যবসা। আর কয়েক বছরে তার খামারে এখন হলষ্টিন ফ্রিজিয়ান ও জার্সি উপজাতের ২০ টি গাভী ও ৫ টি বকনা রয়েছে। প্রতিপালনে নিয়মিত খাওয়াচ্ছেন কাঁচা সবুজ ঘাস, গমের ভুষি, মসুর পাউডার, ছোলার খোসা।

এতে গাভীগুলো হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি ১০টি গাভী থেকে গড়ে ২৫ কেজি করে মোট ২৫০ লিটার দুধ নিয়মিত দোহন করছেন।  রবিউল ইসলাম জানান, পারিবারিক ভাবে সকলে খামারে শ্রম দিচ্ছি। তাই সমস্যা নেই। তারপরেও দেখাশোনার জন্য একজন লোক রয়েছে। আর বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করছি।

এই টাকা থেকে খামারের গাভীর পরিচর্যা, খাদ্য, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যন্য ব্যায় মিটিয়ে ৫ হাজার টাকা অবশিষ্ট থাকছে। এতে দুধ বিক্রি থেকে মাসে প্রায় দেড় লাখ আয় হচ্ছে। এর আয় দিয়ে খামারের পাশে ৮ শতক জমি কিনে দ্বিত্বল বাড়ি নির্মাণ, পরিবারের ব্যায় ও ব্যাংক ঋনের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করছেন।
রবিউল ইসলাম আরও জানান, অনেক গাভী গর্ভবতি। সে গুলো বাচ্চা প্রসবের পর অন্যগুলো দুধ দেবে।

এভাবে চক্রাকারে খামার থেকে আয় হচ্ছে। তবে খামারের গাভীগুলোর সরকারি চিকিৎসা সহায়তা বা সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। পশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের সময়মত না পাওয়ায় পল্লি পশু চিকিৎসকদের দ্বারা  হয়রানী শিকার হন তিনি। ওই এলাকার সিরাজুল ইসলাম নামে এক গরু ব্যাবসায়ি জানান, রবিউলের দেখাদেখি অনেকে ডেয়রী ফার্ম করে লাভবান হচ্ছেন। তার কাছে নিচ্ছেন ফার্মের পরিপাটির পরামর্শ। এতে মডেল খামারিতে পরিণত হয়েছেন।

এ নিয়ে সৈয়দপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: শ্যামল কুমার রায় বলেন, রবিউল কখনও চিকিৎসা সহায়তার জন্য আসেনি। তার খামারের বিষয়ে জানা ছিল না। তবে পেশাজীবি খামারিদের জন্য সরকারি ভাবে সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে। তার খামার পরিদর্শন করে উন্নত ব্যবস্থপনা ও গাভীগুলোর দুধ উৎপাদন বাড়াতে কারিগরি দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, কৃষক রবিউলের খামার একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তাঁর দেখাদেখি অনেকে এভাবে স্বাবলম্বীর পাশাপাশি অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে।

এইচআর

Link copied!