Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সম্ভাবনাময় ফল ড্রাগন এখন পোরশা বরেন্দ্র ভূমিতে

ইসমাইল হোসেন, পোরশা (নওগাঁ)

ইসমাইল হোসেন, পোরশা (নওগাঁ)

জুলাই ২৪, ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম


সম্ভাবনাময় ফল ড্রাগন এখন পোরশা বরেন্দ্র ভূমিতে

পোরশায় এক ফসলি বরেন্দ্র অঞ্চলে চাষ হচ্ছে বিদেশি ফল ড্রাগন। একটি খুঁটির মাধ্যমে উপরে বেয়ে উঠার সুযোগ করে দিলে সহজেই বেড়ে উঠছে ড্রাগনের চারা। এতে খুব বেশি সেচের প্রয়োজনও হয় না। উপযুক্ত পরিচর্যা পাওয়ায় এই বরেন্দ্র মাটিতে ড্রাগনের আশানুরূপ ফলন মিলছে। এই ফলটি দেখতেও বেশ সুন্দর। 

সামান্য  জমিতে ড্রাগন-চাষে সফল হয়েছেন এমন চাষীদেরই একজন আব্দুল আজিজ গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়নের অধিবাসী ।

সরেজমিনে  ড্রাগন-বাগানে গিয়ে দেখা যায়, জায়গাটি সমতল ভুমিতে অবস্থিত । সেখানে ৫ শতকের জমিতে ১৫টি খুঁটিতে রয়েছে ড্রাগন গাছ। এগুলো লাগানো হয়েছে তিন বছর আগে। পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ঠিকভাবে যত্ন নিয়েছেন আব্দুল আজিজ। ফলে এক বছরের মাথায় বেশ ভাল ফলনও পেয়েছেন বলে তিনি জানান।

আব্দুল আজিজ বলেন, বিদেশি ফল হিসেবে প্রথমে আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু সামান্য জমিতে তিনি যে ফল পেয়েছেন বাজারে বিক্রি করে লাভ হয়েছে ৩৪ হাজার টাকা।

জমি পেলে নতুনভাবে ড্রাগন চাষের মাত্রা আরো বাড়াবেন বলেও জানান আব্দুল আজিজ।

তবে নতুন ও বিদেশি ফল হিসেবে ড্রাগন ফল বেঁচা-বিক্রি সম্পর্কে আজিজ জানান, ক্রেতারা প্রথমে শখের বশে কিনত।  এখন স্থানীয়ভাবেও এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে এর ফলন বৃদ্ধি পেলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

তিনি নিজেও সপ্তাহে দু’দিন স্থানীয় গাংগুরিয়া মশিদপুর দিঘীরহাট ও শিশা হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যান। এছাড়া কিছু খুচরা ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে  ড্রাগন ফল সংগ্রহ করে থাকেন।

তার সাফল্য দেখে অনেকেই এখন ড্রাগন চাষের দিকে ঝুঁকছেন; তবে সেগুলো সীমিত পরিসরে। বিদেশি ও নতুন ফল হওয়ায় এগুলোর পরিচর্যায় ঘাটতি রয়েছে। এ ব্যাপারে  পোরশা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

বরেন্দ্র এই পোরশার মাটিতে তেতুলিয়া ইউনিয়নের আরো একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তিনি ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে লাভবান হয়েছেন। কোন এক কালে এই বরেন্দ্র জমিতে সারা বছরে আকাশের পানি দিয়ে মাত্র একটি ধানের ফসল হতো। কিন্তু এখন এ জমিতে পানির সুব্যবস্থা হওয়ায় আম, ড্রাগন, পিয়ারা সহ বাদামের চাষ হচ্ছে বলে দেখা যায়।

কৃষি বিভাগ জানায়, ড্রাগন মূলত এক বছরের ফল। চারা লাগানোর এক বছরে মাথায় ফল ধরে। অন্য কোনো চারা বা গাছে ড্রাগনের মতো ফল আসে না। বিশেষ করে মার্চ-এপ্রিল থেকে শুরু করে নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। যার কারণে ড্রাগনকে বছরব্যাপী ফলও বলা যায়। ফলে ড্রাগন ফলের চাষ একটি লাভজনক জীবিকা হয়ে উঠেছে। এর পুষ্টিগুণও বেশি। আকারভেদে কেজি প্রতি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, ইতোমধ্যে  উপজেলায় ৬টি বাগানে ড্রাগন ফলের চারা দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, দুই বছরের মধ্যে ড্রাগন ফলের ভাল বাজার সৃষ্টি হবে। যে কোনো কৃষক ড্রাগন ফল চাষ করার পর দুই বছরের মধ্যে উৎপাদন খরচ তুলে ফেলতে পারেন। এরপর থেকে সামান্য যত্নেই বাড়তি লাভ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

আরএস

Link copied!