ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আগস্ট ১৩, ২০২৩, ০৫:০০ পিএম
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আগস্ট ১৩, ২০২৩, ০৫:০০ পিএম
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বহু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বহু পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এবং ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে আরো অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে কান্দলি, সুরিহারা, কালিনগর, চতল, দিঘিরপাড়, রামনগর, জিগাতলা, দুপুরিয়া, আয়নাপুর, ফুলহাড়ীসহ বেশ কিছু এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বহু আমন ফসল। পাশাপাশি অনেক মৎস্য চাষিদের পুকুর ডুবে লাখ লাখ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গিয়েছে।
এতে মৎস্য চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এছাড়াও অতি বৃষ্টির কারণে অনেক শাক-সবজির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এই সংবাদ লেখা পযর্ন্ত বৃষ্টি বর্ষণ অব্যাহত আছে। ফলে আরো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য চলতি বছর আমন মৌসুমে চাষের উপযুক্ত সময় শ্রাবণের শুরু থেকে খরা হওয়ার কারণে দেরিতে আমন চাষ করা হয়। দীর্ঘ একমাস খরার পর বৃষ্টির দেখা মিলে। বৃষ্টি শুরু হলে কৃষকেরা ব্যাপক ভাবে আমন চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে বন্যার কারণে আবারো কৃষকেরা আমন চাষ ব্যাহত হওয়ার মুখে পড়েছে। এই প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার কারণে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলো আমন চাষ উৎপাদনে খরা ও বন্যার মুখে পড়ে উৎপাদনে বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে। এতে চলতি বছর আমন উৎপাদনে লক্ষমাত্রা হুমকির মুখে পড়ে।
বন্যার পানির স্রোতে বহু রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে গ্রামাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত তিনদিন অব্যাহত বর্ষণের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। লাগামহীনভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দরিদ্র ও নিম্নের আয়ের মানুষেরা মহাবিপাকে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ভারত থেকে নেমে আসা ছোট ও বড় সাতটি নদী ঝিনাগাতী উপজেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। গত বছর এ ৭টি নদীর বন্যার পানিতে নদীর উভয় পাড় ভেঙে বহু এলাকার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। উক্ত নদীর অধিকাংশ ভাঙন বাঁধ না দেওয়ার কারণে চলতি বছর বন্যার পানি পূর্বের নদীর ভাঙা দিয়ে সহজেই প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বহু ফসলি জমি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নদীগুলোর সমস্ত ভাঙন মেরামত না করার কারণে এ এলাকার দরিদ্র কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
জানা যায়, জেলার সিংহভাগ লোক কৃষক। তাদের আয়ের প্রধান উৎসব কৃষি ফসল। উৎপাদিত কৃষি ফসল উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে বাড়তি ফসল বাজারে বিক্রি করে। আর এই বাড়তি ফসল দেশের চাহিদায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে। তাই এ এলাকার দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়গুলো অতি গুরুত্বের সহিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এআরএস