Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

একের জন্য দশের ভোগান্তি

নান্দাইলে জলাবদ্ধতায় আমন হারাচ্ছে শতাধিক কৃষক

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

আগস্ট ২২, ২০২৩, ০৪:১২ পিএম


নান্দাইলে জলাবদ্ধতায় আমন হারাচ্ছে শতাধিক কৃষক

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৫নং গাংগাইল ইউনিয়নের বনুড়া গ্রামে বনুড়া মৌজাস্থ প্রায় ১০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে আমন আবাদ ব্যাহত হচ্ছে শতাধিক কৃষকের। চলতি আমন ধান আবাদে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় জমিতে প্রায় ৩ ফুটের উপরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে দিশে হারা এলাকার কৃষাণ-কৃষাণী। ধান আবাদ না হলে দু-মুঠো আহার যোগানো তাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়বে। ফলে একের জন্য দশের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

জানাগেছে, বনুড়া গ্রামের মৃত মীর হোসেনের পুত্র আবুল কালাম উক্ত জলাবদ্ধতার একমাত্র কারণ। তিনি পানি নিষ্কাশনের জন্য ক্ষেতের এক ফুট আইল কেটে দিলেই সহজে জলাবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন হয়ে যায়। কিন্তু পার্শ্ববতী ক্ষেতের মালিকের সাথে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের কাটিয়ে তিনি পানি নিষ্কাশনে বাধা দিচ্ছেন। তবে এলাকার কৃষকের স্বার্থেও তিনি পানি নিষ্কাশনের পথ দিবেন না। বরং তিনি এলাকাবাসীকে জানান, প্রশাসন এসে আমাকে গুলি করলেও আমি এ দিক দিয়ে পানি যেতে দিবো না। জনগণ যখন আমার না, তখন জনগণের জন্যও আমি না। আমার যা হয়, হউক। 

এলাকার প্রতিবন্ধী কৃষক ইদ্রিছ আলী বলেন, আমি এই মৌজায় ৫০শতক জমি বন্ধক রেখেছি, কিন্তুু জলাবদ্ধতার কারনে চাষাবাদ করতে পারছিনা। এছাড়া বিধবা কৃষাণী পারভীন আক্তার ও বকুলা খাতুন জানান, অল্পটুকু জমিতে ধান আবাদ করে অন্তত ছয় মাস দুমুঠো ঘরের ভাত খেতে পারতাম। কিন্তুু এখন আবুল কালামের জন্য জলাবদ্ধতার কারণে সবশেষ হয়ে গেছে। ধান আবাদ করতে না পারলে আমরা খামু কি ? 

কৃষক সবুজ মিয়া, তারা মিয়া ও আব্দুল মজিদ সহ অনেকেই বলেন, আমাদেরতো চাকরি-বাকরি নাই। বাপ-দাদার এইটুকু জমি চাষাবাদ করে কোনমতে সংসার চালাই। এ বছর জলাবদ্ধতার কারণে মনে হচ্ছে আমন ধানের চাষাবাদ করা যাবে না। জমিতে তিন ফুটের উপরে পানি। অনেকের লাগানো ক্ষেত তলিয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালে প্রশাসন এসে আবুল কালামের ক্ষেতের আইল কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিয়ে গেছিলেন। কিন্তু পরদিনই আবার তা বন্ধ করে দেয় আবুল কালাম। এতে জলাবদ্ধ জমির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।

 ৫নং গাংগাইল ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট আসাদুজ্জামান নয়ন বলেন, আমি আবুল কালামকে একাধিকবার বলার পরেও সে কারও কথা শুনেছ না। আমি কৃষকদেরকে বলেছি আবুল কালামের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিকট একটি দরখাস্ত দেওয়ার জন্য। 

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এটিএম আরিফের সাথে সেলফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি নিজে উপস্থিত হয়ে এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে আবুল কালামের মতের ভিত্তিতেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এখন আবার বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। আমি এ বিষয়টি দেখছি।   

আরএস
 


 

Link copied!