Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ফুলপুরে লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগ

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩, ০৬:৪৮ পিএম


ফুলপুরে লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগ

ময়মনসিংহের ফুলপুরে বিদ্যুতের লাগাতার লোডশেডিংয়ে জনজীবনে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। ভাদ্র মাসের তীব্র তাপদাহের সঙ্গে বিদ্যুতের এমন আনলিমিটেড লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলা হাসপাতালে অবস্থানরত বিভিন্ন রোগী, গর্ববতী মহিলা, বৃদ্ধ ও শিশু বাচ্চারা।

ভ্যাপসা গরমে জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন প্রায় প্রতিটা পরিবারের সদস্যরা। তাই হাসপাতালেও দেখা দিয়েছে অতিরিক্ত রোগীর চাপ। অপরদিকে, ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় স্থানীয় কলকারখানা গুলোতে উৎপাদন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বেশীরভাগ সময় লোডশেডিং থাকার কারণে মানুুষজন একটু স্বস্তির আশায় দিনের বেলায় গাছের নিচে ও রাতের বেলায় পুকুরধারে বা বাসাবাড়ীর সামনে বিভিন্ন খোলা রাস্তায় বসে গল্পগুজবে সময়পার করছেন বিদ্যুৎ আসার অপেক্ষায়। অনেকেই আবার টিওবয়েলের পানিতে বার বার গোসল করে শরীর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছেন। এমতাবস্থায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় প্রচন্ড ব্যাঘাত ঘটছে। বিশেষ করে পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ফুলপুর পৌরসভার আমুয়াকান্দা গ্রামের (পয়ারী রোডের) বিদ্যুৎ গ্রাহক আমিনুল ইসলাম বলেন, দিন-রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছিনা। অথচ কোনো মাসের বিদ্যুৎ বিল বাকী রাখিনা। তারপরেও এমন তামাশার সেবা কেনো পাচ্ছি আমরা।

পৌরসভার দিউ গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক মাজহারুল ইসলাম নিপু বলেন, মূলত আমাদের এখানে কখনোও বিদ্যুৎ যায়না, তবে মাঝে মাঝে আসে। এটাই আমাদের সৌভাগ্য। এমনিতেই লাগাতার লোডশেডিং চলছে, তারপর আবার কথিত বিদ্যুৎ উন্নয়ন কাজের নামে হরহামেশাই সারাদিন বিদ্যুৎ বন্ধ সরবরাহ রাখেন কর্তৃপক্ষ।

সাহাপুর গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এমন গরমেও যেহেতু আমরা ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছিনা তাহলে বিদ্যুতের পিলারগুলো কর্তৃপক্ষ উঠিয়ে নিয়ে যাক। আমরা আদিম যুগেই ফিরে যাই। আমাদের গ্রামের সকল বিদ্যুৎ গ্রাহকসহ উপজেলার অন্যান্য গ্রাহকদের নিয়ে খুব দ্রুতই ফুলপুর বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

পৌরসভার হুফফাজুল কোরআন নূরীয়া মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ নূর হোসেন তালুকদার বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ছোট্ট শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছি। বিদ্যুতের জন্য ঠিকমতো ফ্যান চালাতে পাচ্ছিনা। এ কারণে দিনে ও রাতে বাচ্চারা ঠিকমতো ঘুমাতেও পাচ্ছেনা। কোরআন শিখার জন্য তাদের গভীর রাতে উঠতে হয়। সে সময়েও বিদ্যুৎ থাকেনা।

শাপলা রোডের বিদ্যুৎ গ্রাহক সেচ্ছাসেবী জান্নাতুল ফেরদৌস স্বর্ণা বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের এমন সমস্যার জন্য বাসায় একটি আইপিএস লাগিয়েছি। কিন্তুু আইপিএসের ব্যাটারী চার্জ হওয়ার জন্য যে সময়টুকু প্রয়োজন ততক্ষণও বিদ্যুৎ থাকেনা।

এ বিষয়ে ফুলপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, বর্তমানে ময়মনসিংহ জেলা শহর ও মেডিকেল কলেজ এলাকাতেও লোডশেডিং হচ্ছে। ফুলপুরে প্রতিদিন চার ঘন্টার বেশী লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছেনা।

মিজানুর রহমান/এআরএস

Link copied!