ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ০৬:৪৫ পিএম
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ০৬:৪৫ পিএম
প্রশাসনের উপস্থিতিতে লুকিয়ে রাখা আলু বিক্রি শুরু
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার একটি সবজি বাজারে আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। এতে সকাল থেকে আলু শূন্য পুরো বাজার। ভোগান্তিতে পড়ে বাজারে আসা ক্রেতারা।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এমন চিত্র ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার আজাদমোড় কাঁচাবাজারে। অভিযোগ সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অধিক মূল্যে আলু বিক্রি করতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করলেও, পাইকারি বাজারে সেই নির্ধারিত মূল্যে আলু কিনতে পারছেন না তারা।
খবর পেয়ে রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বাজারে আসেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান এবং পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন। পরে তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আলোচনায় পৌর মেয়র সরকার নির্ধারিত দামে পাইকারি বাজার থেকে আলু কেনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন এবং ইউএনও ৩৬ টাকা কেজি দরে কার্ডিনাল আলু বিক্রি করতে নির্দেশনা দেন। এতে ব্যবসায়ীরা আবারো লুকিয়ে রাখা আলু বের করে দোকানে বিক্রি শুরু করে।
জানা যায়, রোববার সকালে থেকে বাজারের সব দোকান আলু বিক্রি বন্ধ রাখে। সব দোকান ছিল আলু শূন্য। শনিবার সকালে বাজার মনিটরিং করেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসময় কর্মকর্তারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অধিক মূল্যে আলু বিক্রি করলে, ওইসব ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান দেন। প্রশাসনের এমন বার্তায় রবিবার সকালে দোকান থেকে আলু সরিয়ে ফেলে ব্যবসায়ীরা।
বাজারটিতে দেশি জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে। কার্ডিনাল আলু ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। এছাড়াও দেশী জাতের পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং ভারতীয় জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে।
সকালে বাজারে আলু কিনতে এসে ফিরে যাওয়া রিক্সা চালক তাজউদ্দীন বলেন, ‘দুই কেজি আলু কিনতে গিয়েছিলাম। দোকানদার বস্তায় আলু পলিথিন দিয়ে ঢেকে লুকিয়ে রেখেছে। তবুও আলু দিল না।’
আরেক ক্রেতা নুসরাত জাহান বলেন, ‘শাক-সবজি কিনে দোকানদারকে বললাম আলু দেন। দোকানদার বললেন আলু নেই। পুরো বাজার খুঁজে দেখি কোন দোকানেই আলু নেই। সব দোকানদার যোগসাজশে আলু গায়েব করেছে।’
আলু বিক্রেতা মোজাফ্ফর হোসেন ঢেকি বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে কার্ডিনাল বা স্টিক আলু কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকায়। আমরা বিক্রি করতেছি ৪০ টাকা কেজিতে। মাঝে যাতায়াত খরচ আছে। আর সরকার সেই আলু বিক্রি করতে বলতেছে ৩৫-৩৬ টাকায়।’
আরেক ব্যবসায়ী আতোয়ার রহমান বলেন, ‘কোল্ড স্টোর থেকে আলু কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকায়। প্রশাসন তো এসব স্টোর চোখে দেখে না। যত নির্যাতন আমাদের মত ছোট ব্যবসায়ীদের উপর। আমরা পাইকারী বাজারে কম দামে যদি কিনতে পারি, তবে কম দামে বিক্রি করতে সমস্যা নেই। আমরা ৩৫ টাকায় কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করি। প্রশাসন আবার আমাদেরকে এসেই জরিমানা করে।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি সকাল থেকে আলু বিক্রি বন্ধ ছিল। আমাদের উপস্থিতিতে দুপুর থেকে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আলু লুকিয়ে রাখায় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সমস্যা সমাধান হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে পরবর্তীতে বড় সমস্যা সৃষ্টি হবে।’
এআরএস