নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
অক্টোবর ২৪, ২০২৩, ০৭:০১ পিএম
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
অক্টোবর ২৪, ২০২৩, ০৭:০১ পিএম
ভৈরবে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার কবলে প্রাণ হারালো নান্দাইল উপজেলার একই পরিবারের চারজনসহ মোট পাচঁজন। মঙ্গলবার সকালে জানাযা নামাজের পর নিহতদেরকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তবে একই পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খবর পেয়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল, থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে নিহতদের বাড়িতে যান।
জানাগেছে, নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনাটি গ্রামের একই পরিবারের কৃষক রইছ উদ্দিনের পুত্র সুজন মিয়া (৩৫) ও সুজনের স্ত্রী ফাতেমা (২৮) এবং দুই পুত্র সজিব (১২) ও ইসমাইল হোসেন (৭) ঘটনাস্থলে মারা যান। তবে ভাগ্যবশত প্রাণে বেঁচ যান নিহত সুজনের সহোদর ভাই ও ভাতিজারা।
অপরদিকে উপজেলার মুশুলী ইউনিয়নের নবীয়াবাদ গ্রামের আরজু মিয়ার মেয়ে গার্মেন্টস কর্মী হোসনা আক্তার(২৩)। কিন্তু প্রানে বেঁচে যায় সঙ্গে থাকা নিহত হোসনার স্বামীর ভাই ও ৪ বছরের শিশুপুত্র। তারা প্রত্যেকেই গামেন্টস কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁরা বাড়ি থেকে ঢাকায় কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এই ভয়াবহ দূর্ঘটনায় প্রাণ হারায়।
তবে রইছ উদ্দিনের বাড়িতে তিনদিন আগে গত হওয়া বিয়ের আনন্দ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। কৃষক রইছ উদ্দিন বাড়িতে তাঁর স্ত্রী মহিলা আক্তারকে (৬৫) নিয়ে বসবাস করেন।
নিহতের ভাই স্বপন মিয়া জানান, পরিবারের সদস্যরা একাসাথে বাড়ি আসা-যাওয়া করে। তাই তাঁদের পছন্দের বাহন হচ্ছে ট্রেন। সেই ট্রেনে আমাদের এক ভাইকে কেড়ে নিয়েছে। সুজন মিয়ার মা মহিলা আক্তার কাঁদছিলেন। গ্রামের নারীরা তাঁকে স্বান্তনা দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, দুইডা নাতিরে আদর কইরা বাড়ি থাইক্কা বিদায় দিছি। এই বিদায় যে শেষ বিদায় অইবো সেইডা কি জানতাম।
নান্দাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মালেক চৌধুরী (স্বপন) জানান, একটি পরিবারের চার সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। রেল কর্তৃপক্ষের উচিত ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক দোষিদের শাস্তির ব্যবস্থা করা,সেইসাথে নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ প্রদান।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুন কৃষ্ণ পাল ও নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদুজজামান নিহতের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সহমর্মিতা জানিয়েছেন।
এইচআর