Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ফেনীতে আনন্দ-বেদনার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জন

ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী প্রতিনিধি

অক্টোবর ২৫, ২০২৩, ০১:৪০ পিএম


ফেনীতে আনন্দ-বেদনার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জন

আনন্দ-বেদনার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জন উলুধ্বনি, শাঁখ আর ঢাকের বাদ্যে মুখরিত ফেনীর কালিপাল দশমি ঘাট। মঙ্গলধ্বনির সঙ্গে থেকে থেকে শোনা গেছে হাজার মানুষের আহ্বান ‘আসছে বছর আবার হবে, মা তুমি আবার এসো’।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো কালী পালের দশমী ঘাট যেন এক মহা উৎসবে রূপ নিয়েছে। এর আগে ‘ধান-দূর্বার দিব্যি, মা তুমি আবার এসো’...বাঙালি হিন্দু ভক্ত কণ্ঠের এমন আকুতির ভেতর প্রতিমা বিসর্জনে বিদায় হলো দেবী দুর্গার।

শান্তিজল গ্রহণে আড়ম্বরেই শেষ হলো বাঙালি হিন্দুদের সাংবাৎসরিক সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের দশমীতে মঙ্গলবার মণ্ডপে মণ্ডপে বিহিতপূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। অতঃপর দেবীর বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, টানা পাঁচদিন মাটির প্রতিমারূপে মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে দুর্গা ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে।

সকালে বিহিতপূজার পর ভক্তের কায়মনো প্রার্থনা- মহামারী করোনা থেকে নিষ্কৃতি পাক এই পৃথিবী। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জাগরূক হোক সকল মানুষ। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার প্রতিবাদে এবার কাঙ্ক্ষিত সিঁদুর খেলা থেকে বিরত ছিলেন হিন্দু রমণীরা। একদিকে বিদায়ের বেদনা অন্যদিকে উৎসব আনন্দে দেবীকে বিদায় জানান ভক্তরা।

বিজয়া দশমী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন, থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী।

ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শুসেন চন্দ্র শীলের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন, পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা এডভোকেট প্রিয়রঞ্জন দত্ত।

বিকেল ৫টার পর থেকে ফেনীর কালীপালের দশমী ঘাটে দেবী দুর্গার বিসর্জন শুরু হয়। ফেনী কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দির থেকে আসা পূজা কমিটির প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীকে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর অন্যান্য পূজামণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

করোনা থেকে মুক্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিসহ সব ধরনের মঙ্গল কামনা ও অশুভকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। মঙ্গলধ্বনি, উলুধ্বনি, শাঁখ আর ঢাকের ধ্বনিতে দেবী প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। আবারও মঙ্গলবার্তা নিয়ে আগামী বছর যেন মা দুর্গা আগমন করেন বিসর্জনকালে সেই প্রার্থনা করেন ভক্তরা।

জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদ জানায়, জেলায় ১৪৭টি মণ্ডপের মধ্যে ফেনী সদরে ৪৬টি, পৌরসভা ১২টি, ফুলগাজী উপজেলায় ৩৫টি, সোনাগাজীতে ২৩টি, দাগনভূঞায় ১৯টি, পরশুরামে ৫টি ও ছাগলনাইয়ায় ৭টি।

ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, মা দেবী দুর্গা যেন অশুভ শক্তির বিনাশ করে সবাইকে ভালো রাখেন। পাশাপাশি তিনি যেন দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের মধ্যদিয়ে পুরো পৃথিবীকে আলোকিত করেন। এমনটাই আমার প্রার্থনা।

এআরএস

Link copied!