নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
নভেম্বর ৩, ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
নভেম্বর ৩, ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম
হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ মারা গেলে মৃত ব্যক্তির দেহ দাহ্ করাকে সৎকার কার্য বলা হয়। সেই সৎকার কার্য সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন একটি সুনির্দিষ্ট স্থান। যা শশ্মান ঘাট নামে পরিচিত। কিন্তু শশ্মান ঘাটই যদি না থাকে, আর লাশ দাহ্ না করা যায়, তবে হিন্দু ধর্মমতে ভগবানের অভিশপ্ত হতে হয়। তাই সৎকারের জন্য জায়গা না পাওয়ায় নদীর ধারে পানিতে নেমে কলাগাছের ভেলার উপর সৎকার কার্য সম্পন্ন করতে হয় তাদের।
ঠিক তেমনটি ঘটে চলছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৬নং রাজগাতী ইউনিয়নের কালিগঞ্জবাজার সংলগ্ন হিন্দুপাড়া গ্রামে। এ যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের হৃদয়ে যেন রক্তক্ষরনে ভোগছে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, কালিগঞ্জ হিন্দুপাড়া এলাকাটিতে শতাধিক হিন্দু পরিবারের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু, নারী ও পুরুষ রয়েছে।
পরিবারগুলো দারিদ্র হওয়ায় জমি ক্রয় করে একটি শশ্মান ঘাট তৈরি করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। তবে স্থানীয় একটি সরকারি পরিত্যক্ত জায়গায় বহু বছর যাবত সৎকার কার্য সম্পন্ন করা হতো। এই এলাকার লোকজনের জন্য ওই স্থানটিই ছিল সৎকার কার্যের নির্দিষ্ট স্থান। কিন্তু বিআরএস রেকর্ডে স্থানীয় এক ব্যক্তির নাম উঠায়, তিনি উক্ত জায়গাটুকু বেদখল দিয়ে দেন।
এতে করে বিপদে পড়তে হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের। নদীর ধারে পানির উপর কলাগাছের ভেলাতে সৎকার্য সম্পন্ন করার সময় মৃত ব্যক্তির পরিবার-পরিজন সহ সৎকার্যে আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে এলাকার সন্তোষ চন্দ্র বর্মন বলেন, ভাইরে-আমরা অতি গরীব, মুর্খ মানুষ, আমরা দু-বেলা খাওয়ার যোগাতেই কষ্ট করতে হয়। তার উপর নতুন জায়গা ক্রয় করে সেখানে শশ্মান ঘাট তৈরী করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
শ্রী মানব চন্দ্র ভৌমিক নামে এক যুবক বলেন, এ এলাকায় ৫শতেরও বেশি আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। তবে শশ্মানের জন্য কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ফলে সৎকার কার্য সম্পন্ন করতে খুবই কষ্ট করতে হয়। যদি সরকারিভাবে একটু জায়গার ব্যবস্থা করে শশ্মানঘাট করা হতো তবে আমরা সরকারের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ থাকবো।
এ বিষয়ে রাজগাতী ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেকার মোমতাজ খোকন খুবই দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলবো। একটি শশ্মানঘাট স্থাপন করার জন্য যা করার দরকার তাই করার চেষ্টা করছি। আশা করছি তা হবে, তবে একটু সময় লাগবে।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। অতিদ্রুত বর্মণপাড়ার লোকজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।
এইচআর