জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং (কুমিল্লা)
নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম
জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং (কুমিল্লা)
নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। যে বয়সে শিশু থাকবে মায়ের কোলে কিংবা বই খাতা কলম নিয়ে স্কুলে। সেই বয়সে ড্রাইভিয়ের মত ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় জিড়ত হচ্ছে অনেক শিশু। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ৮ ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় শিশুদের হাতেই চলছে তিনচাকার অটোরিকশা ও ইজিবাইক।
উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কাঁচা-পাকা সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিনচাকার অটোরিকশা ও ইজিবাইক। আর এইসব চালাচ্ছে শিশু-কিশোররা। প্রশিক্ষণ ছাড়াই শিশুরা এসব যানবাহনের চালকের দায়িত্ব থাকা প্রায় গড়ছে দুর্ঘটনা। গ্রামীণ সড়ক থেকে শুরু সব সড়ক-মহাসড়ক এখন অটোরিকশা ও ইজিবাইকের দখলে।
কোন নিয়ম-নীতি না জেনে না মেনে সড়কে চালাচ্ছে এসব তিনচাকার অটো, ইজিবাই। ইজিবাইকের কারণে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট।এছাড়া চালকদের মধ্যে অধিকাংশ অপ্রাপ্ত বয়স্করা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ছাড়াই চালাচ্ছে এইসব অটো ও ইজিবাইক। যার ফলে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে গ্রাম এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইজিবাইক আর এইসব চালাচ্ছে অবুজ শিশুরা। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি ঘোরানো যত্রতত্র পার্কিং অদক্ষতার কারণে যানজটের শিকার হচ্ছে। পদযাত্রীদের অভিযোগ উপজেলা থানা শহরে চলাচলরত তিন চাকার অটো ও ইজিবাইক চালকরা কোন নিয়ম-তোয়াক্কা না করে সড়কে ইচ্ছা মতো ইজিবাইক ঘুরাতে গিয়ে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা এবং যানজট। আবার রাস্তা ভাঙাচুরা অংশে পরিহার করে ভালো অংশ দিয়ে যেতে চায়। যার ফলে তারা ঘন ঘন রাস্তার এপাশ ওপাশ করে পথ চলে।
উপজেলায় গত দুই মাসে ১৫টির মতো সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছে ৫ জন।
ইজিবাইক চালকদের খাম-খেয়ালিতে যানজট আর দুর্ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র। এমন অবস্থায় সঠিক সময়ে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ পথচারীদের অভিযোগ ইজিবাইক চালকরা যততত্র জায়গায় পার্কিং করার কারণে সৃষ্টি ই যানজটের। ১০ মিনিটের রাস্তা কখনো কখনো ২০ মিনিট আদা ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
জানা যায়, যারা ইজিবাইক চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১২-১৪ বছরের কম বাসের কিশোরেরাও রয়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ইজিবাইক সড়কে নামানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ এইসব ইজিবাইক শুধুমাত্র সদর ও আশেপাশের এলাকায় চালানোর অনুমতি দিলেও তারা যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে দ্রুত গতিতে যানবাহনের সাথে পাল্লা দিয়ে যাত্রী বহন করে। এইসব ইজিবাইক চালকদের মধ্যে কেউ কেউ মাঠের কৃষি শ্রমিক অথবা আগে রিকশা ভ্যান চালাতেন আবার কেউ কেউ বয়সে কিশোর এদের শতকরা ৮০ জন চালকেই জানেন না কিভাবে রাস্তায় ইজিবাইক চালাতে হয়। তারপরও তারা নিয়মিত উপজেলা সদর থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চলসহ সর্বত্রই ৬/৭ জন যাত্রী নিয়ে দ্রুত গতিতে এসব যানবাহন চালিয়ে যাচ্ছে।
ইজিবাইক চালক রুবেল হোসেন জানান, তিনি পাঁচ বছর ধরে ইজিবাইক চালিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসারের জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, যে হারে প্রতিদিন নতুন নতুন ইজিবাইক রাস্তায় নামছে তাতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তার অভিযোগ নতুন ইজিবাইক চালকরা আইন-কানুন মানে না কে কত টাকা ভাড়া আয় করবে তারা সেই প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত এ কারণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা বাড়ছে।
বুড়িচং সদরের দোকানদার মো. ইউসুফের অভিযোগে এ সমস্ত চালকদের কোন প্রশিক্ষণ নেই যার ফলে রাস্তায় পাশে থেকে আসা যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে চালকদের ইচ্ছাকৃত যানজটের কারণে ভোগান্তিটা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
২নং বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো. আব্দুল করিম বলেন- আমরা তিনচাকার অটো ও ইজিবাইক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে বসছি যাতে অপ্রাপ্ত বয়স্করা ইজিবাইক চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে।
বুড়িচং উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু- কিশোরদের কোনো ধরনের যান চালাতে দেওয়া হবে না। সতর্কতামূলক মাইকিং করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এআরএস