Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

আজ ভালুকা মুক্ত দিবস

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ৮, ২০২৩, ০২:৩২ পিএম


আজ ভালুকা মুক্ত দিবস

আজ ৮ ডিসেম্বর ভালুকা পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক মেজর আফসার বাহিনী কাছে এ দিনে ভালুকা ক্যাম্পের কয়েক হাজার রাজাকার, আলবদর ও পাক সেনাদের আত্মসর্মপনের মধ্য দিয়ে ভালুকা মুক্ত হয়।

মেজর আফসার বাহিনীর অদম্য মুক্তি সেনাদের আক্রমণের মুখে পাকসেনা ও রাজাকাররা সূর্য্য উঠার আগেই ভালুকা ক্যাম্প ছেড়ে পাশ্ববর্তী গফঁরগাওয়ের উদ্দেশ্যে সড়ক পথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালালে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে। অনেক রাজাকার অস্ত্র ফেলে বিভিন্ন দিকে পালিয়ে গেলেও বেশীরভাগ আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। পরে মুক্তিরা তাদেরকে ভালুকায় ফিরিয়ে আনে। ভোরের সূর্য উঠতেই জয় বাংলা ধ্বনি তুলে গ্রাম থেকে দলে দলে লোক জমা হতে থাকে হানাদার মুক্ত ভালুকা সদরে।

আটককৃত রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা ও ধিক্কার জানায় স্বাধীন ভালুকার সর্বস্তরের মানুষ। ১৯৭১সনের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে বাংলাকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে ১৭ এপ্রিল বৃটিশ ভারত সেনাবাহিনীর (অব.) সুবেদার তৎকালীন ভালুকা থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আফসার উদ্দিন একটি মাত্র রাইফেল ও ৮জন সদস্য নিয়ে মল্লিকবাড়ী বাজারে গোপনে মুক্তিবাহিনী দল গঠন করেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তারা ভালুকা থানা দখল করে ১৫/১৬টি রাইফেল ও একটি এল এম জি এবং কিছু গোলাবারুদ সংগ্রহ করে। এর কয়েকদিনের মাথায় কাউরাইদ  থেকে ক্ষীরু নদী দিয়ে ভালুকা থানায় আসার পথে পনাশাইল নামক স্থানে পাকবাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ একটি নৌকা মুক্তিযোদ্ধারা আটক করে প্রচুর অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার করে।

পরে ভারতের মেঘালয় হতে প্রশিক্ষনসহ প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আসার পর এটি একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিনত হয়। কিছুদিনের মধ্যেই ৮ সদস্যের দলটি সারে চার হাজারে উন্নীত হয়ে এফ জে ১১নং সেক্টরের ময়মনসিংহ সদর দক্ষিণ ও ঢাকা সদর উত্তর সাব সেক্টর অধিনায়ক  মেজর আফসার ব্যাটেলিয়ন নামে পরিচিত লাভ করে।

৭১এর ২৫শে জুন শুক্রবার সকাল হতে পরদিন শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভালুকা গফরগাঁও সড়কের ভাওয়ালিয়াবাজু নামক স্থানে শিমুলিয়া নদীর পারে পাক বাহিনীর সাথে দীর্ঘ ৩৬ ঘণ্টা আফসার বাহিনীর একটানা যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধের পর ভালুকায় পাকবাহিনীর ক্যাম্পটি শক্তিশালী করা হয়।

অপরদিকে স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতারা এখানে ঘরে তুলে বিশাল রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর একটি শক্তিশালী ক্যাম্প। এসব রাজাকার আল বদররা ভালুকার বিভিন্ন গ্রামে দিনের পর দিন হত্যা, নারী ধর্ষণ, বাড়ী ঘরে আগুন ও লুটপাট চালিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। আফসার বাহিনী বিভিন্ন সময়ে ভালুকা ক্যাম্পে পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকবার আক্রমন চালিয়ে তাদেরকে দূর্বল করে ফেলে। এই বাহিনীর দীর্ঘ ৯মাসের যুদ্ধে আফসার উদ্দিনের পুত্র নাজিম উদ্দিন সহ ৪৭জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন।

দিবসটি উদযাপনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভালুকা উপজেলা কমান্ড ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, দোয়া মাহফিল এবং ভালুকা মুক্ত দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।এআরএস

Link copied!