পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৯, ২০২৩, ০৯:৪৯ পিএম
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৯, ২০২৩, ০৯:৪৯ পিএম
আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে রংপুরের মডেল হাসপাতালে রূপ নিয়েছে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চলছে মেজর সার্জারি, সিজার, হার্নিয়া, এপেন্ডিসাইটিস, প্রসব পূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা।
এ ছাড়াও চালু রয়েছে টেলিমেডিসিন, যক্ষ্মা ও চক্ষু রোগ, হূদরোগ এবং ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা। প্রতিদিন বর্হিবিভাগ, জরুরি বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নেন প্রায় ৫ শতাধিক রোগী। সুন্দর পরিপাটি দৃষ্টিদন্দন ও পরিচ্ছন্ন এ হাসপাতালে বর্তমানে ২০ জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ায় খুশি এ উপজেলার সাধারণ মানুষ। ফলে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে রোগীদের।
জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৩০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করা হয়। বাক্সবন্দি থাকা এক্সরে মেশিনসহ সব যন্ত্রপাতি চালু করা হয়। গত ৬ মাসে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন ৪ হাজার জন রোগী। জরুরি ও বর্হিবিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা নেন ৫০০ জন।
প্রতিদিন বর্হিবিভাগে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয় প্রায় ৫ শতাধিক রোগীকে। প্রসব পূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা নিয়েছেন ২৪৫০ জন রোগী। হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে ২৮৯ জনকে। এ ছাড়াও উপস্বাস্থ্য ক্লিনিক ও কমিউনিটি ক্লিনিকে নিরাপদ ডেলিভারি করানো হচ্ছে। মেজর সার্জারি করা হয়েছে ২৭ জনকে।
এ হাসপাতালে রয়েছে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে আধুনিক মানের জিন এক্সপার্ট মেশিন, এক্স-রে মেশিন, অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি। মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা ও চিকিৎসায় বিশেষ অবদান রেখেছে এ হাসপাতালটি। জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সমপ্রতি চালু করা হয়েছে টেলিমেডিসিন সেবা।
ঢাকার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা ভিডিও কলের মাধ্যমে এসব রোগীকে চিকিৎসা-সেবা দেয়া হয় প্রতিদিন। রয়েছে এনসিডি কর্নার, আয়ুর্বেদিক বিভাগ, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, এএসসি কর্নার, কমিউনিটি আই সেন্টার, শিশু কর্নারসহ আলাদা আলাদা চিকিৎসা সেবার জন্য নতুন নতুন সংযোজন। চোখের রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চশমা সরবরাহ করা হচ্ছে হাসপাতাল থেকে।
সরেজমিন হাসপাতালে দেখা গেছে, কোলাহল মুক্ত পরিবেশে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। কেউ টিকিট নিয়ে ডাক্তারের চিকিৎসাপত্র করাচ্ছেন, কেউ ওষুধ তুলছেন। ফুল, ফল ও ঔষধি গাছে ভরা পুরো হাসপাতাল চত্বর। এ হাসপাতালটিতে মোট মঞ্জুরিকৃত পদ রয়েছে ২২৪টি। এর মধ্যে ১৫৯ কর্মরত থাকলেও খালি পদ সংখ্যা ৬৫টি। এর মধ্যে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পাঁচজনের স্থলে রয়েছে ২ জন, ওয়ার্ড বয় ৪ জনের স্থলে রয়েছে একজন। নেই মালিসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদের জনবল।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আসা অন্নদানগরের রবিউল ইসলাম, সুমি বেগম বলেন, এই হাসপাতালে অনেক ভালো ডাক্তার বসেন। তাই অনেক দুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসছি। চিকিৎসা ও ওষুধ দুটোই পেলাম। এর আগেও এসেছি, ভালো চিকিৎসা পেয়েছি।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিশ্বেশ্বর চন্দ্র বর্মন বলেন, এ হাসপাতালে নতুন নতুন অত্যাধুনিক মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারিতে আমরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছি। যেকোনো ডেলিভারি রোগীর জন্য ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম আমি নিজে সরবরাহ করছি। আমাদের বেশি সমস্যা তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা দিয়েছি।
এইচআর