Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

মাঠজুড়ে হলুদের ঢেউ

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩, ০১:২৯ পিএম


মাঠজুড়ে হলুদের ঢেউ
ছবি: আমার সংবাদ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার মাঠজুড়ে হলুদের ঢেউ। উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের। সরিষার এ ফলনে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের আভা ফুটে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার দুই হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্র র্নিধারণ করা হয়েছিলো। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ করেছেন চাষীরা। যা ইতিপূর্বেও সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ১শ’ ১০ মেট্টিক টন।

কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্চার কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঘ মাসের শুরুতে ক্ষেত থেকে সরিষা তোলা শুরু হবে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষার উৎপাদন খরচ কম। বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় চাষিরা সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। উপজেলার আবাদি অনাবাদি ২ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকেরা সাধারণত ছয়টি জাতের সরিষা আবাদ করে থাকে। সেগুলো হচ্ছে উচ্চফলনশীল বিনা সরিষা ৪, বিনা-৯, বিনা-১১, সরিষা বারী-৯, বারী-১৪, বারী-১৫, বারী-১৭, বারী-১৮, বুলেট, টরি-৭ ও পাঞ্জাবজটা জাতের সরিষা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলের মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। মাঠে পরিচর্চার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। দিগন্তজোড়া মাঠে কেবল হলুদের আধিক্য। যতদুর চোখ যায় কেবল হলুদের সমারোহ চোখে পড়ে। চোখ জোড়ানো নয়নাভিরাম এ দৃশ্যভ্রম হতে পারে যে প্রকৃতির গায়ে যেনহলুদ চাদর জড়িয়ে দিয়েছে কেউ। অনুকুল আবহাওয়া, কৃষি বিভাগের প্রণোদনা ও তদারকি এবং কৃষকদের ঐকান্তিক চেষ্টায় এবার উপজেলায় সরিষা চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের হাসির সাথে কৃষকের হাসি যেন একাকার হয়ে আছে।

উপজেলার সবুজবাগ গ্রামের সরিষা চাষী কামাল হোসেন জানান, এবার সরকারী সাহায্য সহযোগিতায় ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। আশা করছেন এবার বাম্পার ফলন পাবেন। পাঁচুড়িয়া গ্রামের আজিজুর বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ফলন অনেক বেশি। দামটাও ভালো পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা তার। নজরুল ইসলাম মল্লিক বলেন, সবিন তেল আমাদেরকে আমদানী করতে হয়। আমদানী র্নিভরশীল না হয়ে দেশে খাদ্য তেল সরিষা রোপন করলে আমাদের চাহিদা মিটবে।

ব্লক সুপারভাইজার অশোক কুমার পাল বলেন, গত মৌসুমে এ ব্লকে ২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছিল। এবার বাড়িয়ে ৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হচ্ছে। চাষীরা এখন সরিষা চাষে ঝুকছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, এ উপজেলায় গত বছরে আবাদী জমি ছিল ১২ শ’ হেক্টর। সেখানে এবার চলতি বছরে আবাদী এরিয়া দাড়িঁয়েছে ২ হাজার ১শ’ ১০ হেক্টর। বারী সরিষা যে জাত আছে। সেটাতে তেলের পার্সেন্ট বেশি। এই বারী সরিষা জাতটি কৃষকরা রোপন করছেন বেশি। বিগত বছরে ছিল ৬শ’ ৮৫ হেক্টর। বর্তমানে দাড়িঁয়েছে ১৫শ’ ৭০ হেক্টর। ভোজ্য তেলের আমদানী র্নিভরতা কমাতে সরকারী প্রণোদনার আওতায় কৃষকদেরকে বীজ, সার, কীটনাশক দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। তেলজাতী উৎপাদন আমরা দ্বিগুন করবো। ফলে এবার অভয়নগরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষার রেকর্ড আবাদ হয়েছে। ফলনও রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছি।

এআরএস

Link copied!