মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
নেত্রকোনার মদনে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে ধলাই ও ডালি নদীর পানি সেচে মাছ নিধন করা হচ্ছে। নদীর পাড়ে মাটির বাঁধ দিয়ে পানি অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে নদীর ওই অংশের পানি প্রায় শুকিয়ে গেলেও প্রশাসন এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিয়শ্রী ইউনিয়ন ভুমি অফিসের পাশে নদীটি সেতুর দুই পাশে ডালি এবং ধলাই নদীর পাশে এ বাঁধ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে রোববার (১৪ জানুয়ারি) দেখা যায়, ডালি ও ধলাই নদীর সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাশের প্রায় পৌনে দুই কিলোমিটার এলাকায় মাটির বাঁধ দিয়েছেন ইজারাদাট। শনিবার(১৩ জানুয়ারি) থেকে বাঁধের দুদিকে কয়েকটি সেচযন্ত্র দিয়ে সেচকাজ চলছে। নদীর ওই অংশ প্রায় শুকিয়ে গেছে। রহস্যজনক কারনে নিচ্ছেনা কোন ব্যবস্থা।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ ও সেচ দিয়ে মাছ নিধন করা বেআইনি কাজ। এতে মাছের স্বাভাবিক বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হয়।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, তিয়শ্রী ইউনিয়নের শিবপাশা সমতা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নাম দিয়ে তিয়শ্রী নূরুল হুসেন খান একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন মাছ ধরার জন্য নদীর এ এলাকাটি ইজারা নিয়েছিলেন। তারা ইজারা নিয়ে ফতেপুর ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামের হেলাল মিয়াকে মাছ ধরার জন্য আবার নিজেরা ইজারা দেয়। এখন সে মাছ নিধনের জন্য সেচ দিয়ে পানি কমাচ্ছেন।
ইজারাদার হেলাল মিয়া বলেন, শীতকালে নদীর পানি কমায় বেশির ভাগ মাছ গভীর পানিতে চলে আসে। নদীর এ জায়গাটিও বেশ গভীর। পাড়ে মাটির বাঁধ দিয়ে নদী দুই ভাগে ভাগ করে ফেলা হয়েছে। সেচের মাধ্যমে পানি গভীর অংশ থেকে নালার মাধ্যমে অগভীর অংশে ফেলা হচ্ছে। এদিকে গভীর অংশের পানি কমে নদী পানিপ্রবাহের ধারা সরু হয়ে গেছে। নদীর পাড়ের কয়েকজন কৃষক বলেন, সেচের কারণে নদীর পানি কমে গেছে। প্রায় প্রতিবছরই এ ঘটনা ঘটছে। ফলে তাঁরা আর কৃষিকাজের জন্য পানি পান না। সেচের পানি না পেয়ে অনেকে কয়েক মাসের জন্য জমির পাশে অগভীর নলকূপ বসান। কিন্তু এর জন্য কয়েক হাজার টাকা খরচ হয়।
ফতেপুর ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামের হেলাল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, এখানে মাছ ধরার জন্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন বাকী অংশ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ইউএনও অফিস থেকে ইজারা নিয়েছি । সরকারি নীতিমালা মেনেই মাছ শিকার হচ্ছে।
তিয়শ্রী ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান কাছে নদী সুখে মাছ ধরছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান আমি অফিসে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে ।
ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, জলমহাল নীতিমালা অনুযায়ী, উন্মুক্ত জলাশয়ে সেচ দিয়ে মাছ নিধন নিষেধ। এতে জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হবে। যারা এমন কাজ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এআরএস