Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

অতিথি পাথিতে মুখর ডাকিয়া পটলের বিল

আব্দুল লতিফ, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল)

আব্দুল লতিফ, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল)

জানুয়ারি ১৬, ২০২৪, ০১:২২ পিএম


অতিথি পাথিতে মুখর ডাকিয়া পটলের বিল
অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর ডাকিয়া পটলের মলাদহ। ছবি: আমার সংবাদ

জেলার ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের সবুজ শ্যামল এক গ্রাম ডাকিয়া পটল। এ গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে বিশাল এক জলাধার। নাম তার মলাদহ। এছাড়া রয়েছে আরো ছোট কয়েকটি বিল। এ বিলগুলোতে প্রতিবছরের মতো এবারো এসেছে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি।

নিত্যদিন ভোরের কুয়াশার আঁচল চিরে দলবেধে আসা পাখির ডানার শো-শো শব্দ আর কলতানে ঘুম ভাঙ্গে স্থানীয়দের।

সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত বিলগুলো যেন শীতের অতিথিদের বরণ করে নিচ্ছে। বিলের কচুরিপানার মাঝে জলকেলিতে মেতে উঠেছে পাখিরা। একটু থেমেই এক ঝাঁক পাখি পানিতে অবতরণ করছে তো আর এক ঝাঁক উড়ে যাচ্ছে। মনে হবে যেন এটা পাখিদের আপন নীড়।

টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার পশ্চিমপ্রান্তে আনেহলা ইউনিয়ন অবস্থিত। এ  ইউনিয়নে ছোট-বড় প্রায় আঠারোটি বিল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মলাদহ, ঝাইতলা, বরকম, পুঁইটা, ধোপারকম, খৈইলাকুড়ি ও আদমবুইড়া। এরমধ্যে মলাদহ হচ্ছে ঘাটাইল উপজেলার সর্ববৃহৎ বিল।

এ বিলগুলো পুরো শীত মৌসুম অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে। মলাদহ ও পুঁইটা বিলে পরিযায়ী পাখিসহ দেশীয় পাখি বেশি দেখা যায়। উল্লেখযোগ্য পাখিগুলো হচ্ছে- বালিহাঁস, পাতিহাঁস, সারস, পানকৌড়ি, নারিলা ও ডাহুক।

চারদিকে সবুজ শ্যামলের সমারোহে বিলগুলো। মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিলবেষ্টিত ডাকিয়া পটল গ্রাম। সকালে এ গ্রামের বিলের কচুরিপানার মাঝে জলকেলিতে মাতে অতিথি পাখি। আর বিকেলের সোনালী রোদে গ্রামের গাছের ডালে ডালে পানকৌড়িসহ বিবিভন্ন পাখির পালক জ্বলজ্বল করে। এ গ্রামের পাশদিয়ে যাওয়ার পথে শত ব্যস্ততার মাঝেও পাখি দেখে অনেক পথচারি একটু দাঁড়িয়ে চোখ জুড়িয়ে নেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মলাদহসহ ডাকিয়া পটলের সবকটি বিল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। আর এই দৃশ্য দেখতে আসে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ আগে আরও বেশি পাখি আসতো। পাখি শিকারীদের দৌরাত্বের কারণে এখন অনেকাংশে কমে যাচ্ছে।

ডাকিয়া পটল গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক বাবর হোসেন জানান, পাখিদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। এখানে পাখি আসে বলেই প্রতিদিন অনেক পাখিপ্রেমী দেখতে আসেন। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের মৌসুম চলে গেলে পাখি যখন চলে যায় তখন বুকটা ফাঁকা লাগে। আবার যখন শীতে ফিরে আসে তখন বুক ভরে যায়।

পাখিপ্রেমী আব্দুল মোতাকাব্বির স্বাধীন বলেন, পাখি আমাদের পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের দেশে আসা অতিথি পাখি যাতে নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

আনেহলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখে। তাই পাখিদের প্রতি সকলকে সহনশীল হতে হবে। আমার ইউনিয়নের যেসব স্থানে অতিথি পাখি আসছে, সেখানে যাতে তারা নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য পরিষদের পক্ষ থেকে নজরদারি রয়েছে।

এআরএস

Link copied!