Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪,

কিশোরগঞ্জে রেলের টিকিট কালোবাজারে, দুর্ভোগে যাত্রীরা

আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ

আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ

জানুয়ারি ২৭, ২০২৪, ০১:৫৯ পিএম


কিশোরগঞ্জে রেলের টিকিট কালোবাজারে, দুর্ভোগে যাত্রীরা
ছবি: আমার সংবাদ

কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা অভিমূখে আন্তঃনগর এগারসিন্দুর প্রভাতী/গোধুলি ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। কিশোরগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ঢাকাগামী এগারো সিন্ধুর প্রভাতী-গোধুলী ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এর আসন সংখ্যা দুই হাজার সাতটি। এছাড়া প্রতিদিন চট্রগ্রামগামী দুটি ট্রেনের একশো সত্তরটি আসনের টিকিটের বরাদ্দ এ স্টেশনের যাত্রীদের জন্য।

অতিরিক্ত স্টপেজ আর অত্যধিক যাত্রী উঠায় ট্রেনগুলো লোকাল ট্রেনে পরিণত হয়েছে। নরসিংদী থেকে বিপুল পরিমান যাত্রী ওঠে যা ট্রেনের ধারন ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। যার ফলে খুব কস্ট করে দমবন্ধ হয়ে যাবার মত অবস্থায় যাতায়াত করে কিশোরগঞ্জ এর যাত্রীরা। এর মধ্যে রেলের টিকেট কালো বাজারিদের হাতে চলে যাওয়ার যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে।

কিশোরগঞ্জ স্টেশনে ৭ দিন আগে গিয়েও টিকিট পাওয়া যায় না এমন অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসন কে দীর্ঘদিন যাবত করা হলেও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে টিকেট কালোবাজারী সিন্ডিকেট এর দৌরাত্ম বাড়ছেই। টিকেট কালোবাজারিতে স্টেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কিছু টিকেট কালোবাজারি জড়িত। সাধারণত টিকেট কালোবাজারিরা টিকেট প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি নিয়ে বিক্রি করে। ঈদ আসলে এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পায়। কালোবাজারিরা শোভন শ্রেণি ১২৫ টাকার টিকেট ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। শোভন চেয়ার ১৫০ টাকার টিকেট ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রথম শ্রেণির ২০০ টাকার টিকেট ৪০০ থেকে ৫০০ করে বিক্রি করছে বলে জানা যায়।

যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারে গিয়ে টিকেট পাওয়া যায় না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই কাউন্টারে না গিয়ে কালোবাজারিদের কাছে থেকেই টিকেট কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রচণ্ড যাত্রীর চাপে টয়লেটের সামনে ও দুই বগির সংযোগস্থলে এবং খাবার বগিতে কম্পার্টমেন্টর দ্বায়িত্বে থাকা এটেনডেন্সরা টাকা নিয়ে মোড়া দিয়ে যাত্রী বসিয়ে নিয়ে যায়। তা ছাড়া ১৩৫ কিলোমিটার পথ যেতে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় নেয় ট্রেন। কোন কোন সময় ৬ ঘণ্টাও লেগে যায়। এগারসিন্ধুর ট্রেনের সার্ভিসের অবস্থাও বেগতিক। বাথরুমে থাকে না পানি, ময়লা পরিষ্কার করা হয় না, বাথরুমের পাশে যারা বসে তাদেরকে দুর্গন্ধের হাত থেকে বাচতে সারা পথ রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হয়। কম্পার্টমেন্টের অনেক বাতি ফিউজ, ফ্যানগুলোও নস্ট হয়ে পড়ে থাকে।

জানা যায়, স্টেশনের পাশের দু‘একটি দোকানে এসব কালোবাজারির টিকেট কিনতে পাওয়া যায়, এছাড়া স্থানীয় কয়েকজন টিকেট কালোবাজারির নামও শোনা যায়। প্রায়শই এদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করে। কিন্তু কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে আবার তারা একই কাজে লিপ্ত হয় বলে টিকেট কালোবাজারি রোধ হচ্ছে না বলে মনে করেন যাত্রীরা।

এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, টিকেট কালোবাজারি রোধে আমরা সব সময় কাজ করছি।এখন রেজিস্টেশনকৃত নাম্বারের অনুকূলে টিকেট বিক্রি করা হয়। যার ফলে টিকেট কালোবাজারি অনেকাংশে কমে গেছে। তারপরেও আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি কেউ যেন টিকেট কালোবাজারি করতে না পারে। তাছাড়া টিকেট কালোবাজারের সঙ্গে জড়িত কাউকে পাওয়া গেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।

এআরএস

Link copied!