Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

অর্থনীতিতে সূর্যমুখীর হাসি

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর

জানুয়ারি ৩১, ২০২৪, ০২:২৭ পিএম


অর্থনীতিতে সূর্যমুখীর হাসি
ছবি: আমার সংবাদ

ফরিদপুর শহরতলীর ডোমরাকান্দি গ্রামের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএডিসি) চোখ জুড়াচ্ছে হলুদ রঙের সূর্যমুখী ফুল। সবুজ পাতা আর হলুদ রঙের সূর্যমুখী ফুলের মুগ্ধতা দেখতে ছুটে আসছেন অসংখ্যক কাছের-দুরের মানুষ। প্রতিদিন বাড়ছে ভিড়। এখানেই নজরকাড়া সূর্যমুখীর হলুদ আঙিনায় বাতাসে দোল খাওয়া সূর্যমুখী দেখে পাশ দিয়ে ছুটে চলা যে কেউ আনন্দিত হবেন। সূর্যমুখীর হলুদের আভা চারিদিকেই যেন ছড়িয়ে আছে অপার মুগ্ধতা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুরে বিএডিসি‍‍`র তত্ত্বাবধায়নে শুধু বীজ সংগ্রহের জন্য প্রায় ১১ বছর ধরে এখানে চাষ করা হচ্ছে সূর্যমুখীর। তিন একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই খামারি জমিতে সূর্যমুখী সারাদেশের ‘ডাল তেলবীজ’ খামারে বীজ সরবরাহ করা হয়। ২০ হাজারের মতো সূর্যমুখী ফুলের এ বাগানে সকাল থেকেই দেখা যায় মানুষের আনাগোনা। প্রতিদিনই এই হলুদ হাতছানিতে শামিল হয় শত শত তরুণ-তরুণী।

সরেজমিনে দেখা যায়, সূর্যমুখী ফুল বাগানের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সী মানুষ ভিড় করছে এ ফুল বাগানে। সূর্যমুখীর এ বাগানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষ ছুটে আসছেন। কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

শহরের বাসিন্দা দাউদ আকন্দ বলেন, পরিবার নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের হলুদের আঙিনায় চোখ বুলাতে এসেছি। প্রতিবছরই আসা হয়। অন্যবারের মতো এবার দুর দরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছেন। আগতরা ফুলের সঙ্গে ছবি,সেলফি, ভিডিও করে ফেসবুকে পোষ্ট করছেন।

শহরের গঙ্গাবন্দি এলাকার চাষি গিয়াস উদ্দিন জানান, সূর্যমুখীর চাষে হেক্টর প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিপরীতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার বীজ বিক্রি করা যায়। অন্য ফসলের চেয়ে কম খরচে অধিক লাভ হওয়ার কারণে এই ফুলের চাষ করেছি। 

এ ব্যাপারে ফরিদপুর বিএডিসি‍‍`র ডাল ও তৈল বীজ খামারের উপসহকারী পরিচালক রাশেদ খান বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে বিএডিসির এ খামারে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হচ্ছে। সূর্যমুখী চাষের আবাদ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বিএডিসি। এ বছর তিন একর জমিতে রোপণ করা হয়েছে সূর্যমুখী ফুল। এখান থেকে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ মণ সূর্যমুখীর বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এই বীজ সারা দেশে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ফরিদপুরে দিনে দিনে সূর্যমুখীর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূর্যমুখী তেলে কোনো কোলেস্টেরল নেই এবং স্বাস্থ্য গুণ অনেক বলে ভোক্তাদের কাছেও দিন দিন চাহিদা বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেচ দিতে হয়। প্রতি একর জমিতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

এআরএস

Link copied!