নেছারাবাদ (পিরাজপুর) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ৩১, ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
নেছারাবাদ (পিরাজপুর) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ৩১, ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরপকাঠি) উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখর কুমার সিকদার হত্যান্ডের প্রধান আসামিসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৮ ও থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে নেছারাবাদ থানায়, শেখর সিকদারের স্ত্রী মালা মন্ডল বাদী হয় ১৫ জনক নামীয় ও আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাত নামক আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারি পুলিশ সুপার, ইউএনও এবং ওসিসহ কর্মকর্তারা ওই এলাকায় পরিদর্শনে রয়েছেন।
ঘটনার পর থক কুড়িয়ানা বাজারের সব দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। দফায় দফায় বিক্ষোভ হচ্ছ। সকালে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম পিপিএম ঘটনাস্হল পরিদর্শন করন। এসময় এলাকাবাসীর এক সমাবেশ সকলকে শান্ত থেকে পুলিশকে সহযোগীতা করার আহব্বান জানিয়ে বক্ততা করেন।
বিকেলে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মা. জাহেদুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হকসহ জেলা-উপজলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্হল পরিদর্শন করেন।
মঙ্গলবার দুপুরের পূর্বে কুড়িয়ানা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার উপস্থিতিতে ও তার দলবলের হামলায় সাবেক চয়োরম্যান শেখর কুমার সিকদার নিহত হন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, ডিবিপুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা বিশেষ অভিযান শুরু করে। পুলিশ এলাকা থেকে স্বাধীন হালদার, তাপস মজুমদার, শংকর সরকার ও বাবুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে।
অপরদিকে আসামিরা দেশ ত্যাগের চেষ্টাকালে র্যাব-৮ এর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি মিঠুন হালদার, সুষ্ময় হালদার, জালিস ও আমিনুল বাকিবিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে বুধবার শেষ বিকেলে নেছারাবাদ থানায় সোপর্দ করে।
বুধবার শেষ বিকলে ময়না তদন্ত শেষে শেখর কুমার সিকদারের মরদেহ কুড়িয়ানায় নিয়ে গেলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যে সকল ধরনের মানুষের অশ্রুশিক্ত হয়। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমান ঘটনাস্হলে পরিদর্শনে গেলে হাজার হাজার মানুষের এক অনির্ধারিত সমাবশে তিনি বলন, অপরাধীরা যতই শক্তিশালি হোকনা কেন আইনাঅনুযায়ী তাদের বিচার হবে।
এসময় পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কানাই লাল বিশ্বাস বলেন, বাদীর স্বপক্ষে যত প্রকারের আইনি সহায়তার প্রয়োজন জেলা বার আইনজীবী সমিতি সর্বাত্মক সহযোগীতা করবে।
এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের লক্ষে বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সহায়তা করা হবে। পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিদ হাসান খান বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ র্যাব অত্যান্ত তৎপর রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধান আসামীসহ ৮জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইনশাল্লাহএই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচার হবে। সুতরাং সকলক ধৈর্য ধারণ করার আহব্বান জানান।
পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বুধবার দুপুরে নেছারাবাদ থানা চত্ত্বরে সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ব্রিফিং দেন। তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তি ও জনবল ব্যবহার করে সল্প সময়ের মধ্যে ১নং আসামি চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার ও ২নং আসামি শংকর সরকারসহ ৮জনকেগ্রেপ্তার করতে পেরেছি। অন্যান্য আসামীদেরকও অচিরেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আসামিরা যাতে কোন ভাবে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে জন্য সকল সীমান্ত ও বিমানবন্ধরে মেসেজ দেওয়া হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদর প্রশ্নের জবাবে বলেন, কুড়িয়ানা তদন্ত কেন্দ্রের কোন পুলিশ সদস্য যদি এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাউকে সহায়তা করেছেন এমন কোন প্রমান পাওয়া গেল তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শেষে কঠোর আইনি ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে। এজন্য একজন সহকারি পুলিশ সুপারকে তদন্তের দ্বায়ীত্ব দেওয়া হয়েছে।
এইচআর