Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

নাগরপুরে রঙিন ফুলকপি চাষে ফাতেমার ভাগ্যবদল

মো. আজিজুল হক, নাগরপুর (টাঙ্গাইল)

মো. আজিজুল হক, নাগরপুর (টাঙ্গাইল)

ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪, ০৫:০০ পিএম


নাগরপুরে রঙিন ফুলকপি চাষে ফাতেমার ভাগ্যবদল

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে রঙিন ফুলকপি চাষ করে হাসি ফুটেছে কৃষানি ফাতেমার মুখে। উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের নিরাপদ সবজিগ্রাম হিসেবে পরিচিত বঙ্গ বুকুটিয়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের স্ত্রী ফাতেমা (৪০) কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

তিনি স্বাস্থ্য সহকারীর চাকরির পাশাপাশি অবসর সময় একজন সফল কৃষানি। রবি মৌসুম এলেই তিনি চিন্তা করেন বিরল জাতীয় কিছু চাষাবাদ করার। উপজেলায় এ বছরই প্রথম এই রঙিন ফুলকপি চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কৃষানি ফাতেমা।

এক ছেলে এক মেয়ের সুখী পরিবার তাদের। স্বামী-স্ত্রী দুজনই সরকারি চাকরিজীবী। স্বামী মতিয়ার রহমান ছুটির দিনগুলো কাটান সবজি বাগানে। এ বছর কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে ৩৩ শতাংশ পতিত জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার জমিতে হলুদ, বেগুনি, সাদা রঙের ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই মানুষ আসছেন। রঙ বেরঙের ফুলকপি চাষ করে লাভবান হয়েছেন ফাতেমা।

তার এ সফলতা দেখে রঙিন কপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এখানকার অনেকেই। ৩৩ শতাংশ জমিতে এই প্রথম চাষ করেছেন হলুদ, বেগুনিসহ সাদা রঙের ফুলকপি। ফলন আসা পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। চারা রোপণের ৮৫ দিনের মাথায় বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে রঙিন এ ফুলকপি। সকল খরচ বাদ দিয়ে তার আয় হবে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা।

এই কপি চাষে রাসায়নিক সার ও ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার না করায় এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। এলাকাতে নতুন ফসল হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই এটির চাহিদা অনেক বেশি। এ ফুলকপিগুলো তার জমি থেকেই বেশিরভাগ বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করছেন। আগামীতে এখানকার অনেক কৃষক অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করবেন বলে ইচ্ছা পোষণ করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন শাকিল বলেন, ফাতেমা একজন স্বাস্থ্য সহকারী হলেও তার নিজের জমিতে সব সময় উন্নত জাতের উচ্চমূল্যের সবজি চাষ করতে আগ্রহী। গত বছর এ জমি পতিত ছিল, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, এই বিষয়টিকে সামনে রেখে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় রঙিন ফুলকপির চারা, জৈব সার, রাসায়নিক সার প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ বছরই তিনি প্রথমবারের মত আবাদ করেছেন হলুদ আর বেগুনি রঙের ফুলকপি। অন্যান্য ফুলকপির তুলনায় এগুলো কালারফুল হওয়াতে মানুষের কাছে খুব আকর্ষণীয় এবং বাজারে এর চাহিদাও খুব বেশি। এ ফুলকপি পুষ্টিগুণ ও মানসম্মত হওয়ায় এখানকার কৃষকরা রঙিন ফুলকপি চাষাবাদে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, নাগরপুরে উচ্চমূল্যের ফসল বিশেষ করে, রঙিন ফুলকপি চাষ এবং জৈব পদ্ধতিতে অন্যান্য সবজি চাষ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। এতে কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ভোক্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান এবং জৈব পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি বিভাগ নাগরপুর একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলাফল নাগরপুরবাসী ইতিমধ্যে উপভোগ করছে। ভবিষ্যতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে ।

ইএইচ

Link copied!