জয়পুরহাট প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০৫:১০ পিএম
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০৫:১০ পিএম
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কোলঘেঁষে প্রবহমান ছোট যমুনা নদীর নাব্যতা ফেরাতে প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খননের কাজ শুরু করা হয় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে নদী খনন কাজের উদ্বোধন করেন জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. সামছুল আলম দুদু।
পাঁচবিবি উপজেলার চেচঁড়া সীমান্ত থেকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার দাদরা পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, ৩০ মিটার প্রস্থ ও ২ মিটার গভীরতায় নদীটি খনন করার দরপত্র পায় মেসার্স নুরুজ্জামান অ্যান্ড ডন ও মেসার্স উন্নয়ন অ্যান্ড জোহা নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নদী খননের ফলে বর্ষাকালে বন্যা মোকাবিলার পাশাপাশি আশপাশের হাজার হাজার হেক্টর জমির আবাদি ফসল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া টেন্ডারে নদীর দুই পাড়ের মাটি বিক্রির কারণে বর্ষাকালে বন্যার পাশাপাশি আবারও ফসলহানির সম্ভাবনা নতুন করে কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছেন।
তাছাড়া মাটি ব্যবসায়ীরা নদীর পাড়ের মাটি কেটে নেওয়াসহ গভীরতা করায় হুমকির মুখে নদী সংলগ্ন ফসলি জমি। এই নিয়ে কৃষকেরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও সুফল পায়নি।
জানাগেছে, নদীটি ৩০ মিটার প্রস্থ ও ২ মিটার গভীরতায় এক্সক্যাভেটর দিয়ে খনন কাজ করার সময় নদীর তলদেশের মাটি দিয়ে দুই পাশে উঁচু উঁচু করে নদীর পাড় বাঁধা হয়। এসময় নদীর অতিরিক্ত মাটি কৃষকদের জমির উপরে রাখা হয়। পরবর্তীতে নদী পাড়ের সেই মাটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
টেন্ডারের মাধ্যমে নদীর মাটি নিয়ে মাটি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প, ইটভাটা আর বসতভিটার মালিকদের কাছে বিক্রি করছেন। মাটি ব্যবসায়ীরা কোথাও এক্সক্যাভেটর দিয়ে, কোথাও শ্রমিক দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টরে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে শুষ্ক মৌসুম। নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে গর্ত করছে। এখন এর কোনো বিরূপ প্রভাব বোঝা যাবে না। তবে বর্ষা মৌসুমে নদীর পাড় ভেঙে ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে নদী গর্ভে। নদীতে প্রবল বেগে স্রোত বইবে। তখন মাটি কাটার এই গর্তে পানি ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে নদীতে বিলীন হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জয়পুরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ছোট যমুনা নদী খননের পর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নদীর দুই পাড়ের মাটি টেন্ডারের মাধ্যমে উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়। মাটি ব্যবসায়ীরা নদীর পাড়ের মাটিসহ যদি ব্যক্তিগত কারো জমির মাটি কেটে নিয়ে যায় সেক্ষেত্রে ভুক্তভোগী প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করতে পারেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। আর বন্যায় যেখানে ভাঙনের কবলে পরবে আমরা সেখানে ব্যবস্থা গ্রহন করব।
পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা সুলতানা বলেন, ছোট যমুনা নদীর মাটির কাটার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
এইচআর