Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

পৌরসভা নির্বাচন

পটুয়াখালীতে হলফনামায় মেয়র প্রার্থীর তথ্য গোপন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম


পটুয়াখালীতে হলফনামায় মেয়র প্রার্থীর তথ্য গোপন
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের হলফনামায় তথ্য গোপন করার অভিযোগ উঠেছে মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে। তিনি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে হলফনামায় পদ্মা ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ খেলাপি ঋণের দায়ে চিঠি দিয়েছে ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই মোটা অঙ্কের খেলাপি ঋণের কথা উল্লেখ করে পৌরসভা নির্বাচনে তার প্রার্থীতা বাতিল চেয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠালেও অজ্ঞাত কারণে আবুল কালাম আজাদ এর প্রার্থীতা অবৈধ ঘোষণা না করে বৈধ ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার খান আবি শাহানুর খান।

মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করেন পটুয়াখালী শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ তিনি বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ এর আপন বড় ভাই।

তিনি তার হলফনামায় দায় দেনা সমূহের প্রকৃতি ও বর্ণনার কলামে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড পটুয়াখালী শাখায় ১ শত ৫ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, যমুনা ব্যাংক লিমিটেড ঢাকার ধানমন্ডি শাখা থেকে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৮২৫ টাকা এবং পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড পটুয়াখালী শাখায় ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি খেলাপি ঋণের ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করে পটুয়াখালী পদ্মা ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক একটি চিঠি দিয়েছে জেলা রিটানিং কর্মকর্তার কাছে। অথচ আবুল কালাম আজাদ তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ৯ কোটি ৫০ টাকা।

 যা ব্যাংকের সাথে হলফনামায় ১৫ কোটির টাকা বিশাল ব্যবধান। এর পরও নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা তার হলফনামা বৈধ ঘোষণা করায় তার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তার পক্ষপাত মূলক আচরণে সংক্ষুদ্ধ হয়ে আপিল মোকদ্দমা দাখিল করেছেন মেয়র প্রার্থী মোঃ শফিকুল ইসলাম।

নির্বাচনী হলফ নামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ সম্পর্কে মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘আমি কিছুই জানিনা, হলফনামায় আমি শুধু স্বাক্ষর করে দিয়েছি’।

পদ্মা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ফয়সাল আমীন বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়েছি, চিঠির সব কিছুই ঠিক আছে’।

জেলা রিটার্নিং অফিসার খান আবি শাহানুর খান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপিল করা হয়েছে। এখন ওটা আপিলকারী কর্তৃপক্ষের বিষয়। আমার সাবজেক্ট শেষ’।

মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় তথ্য গোপনের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। আপিলকারী কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসক মোঃ নূর কুতুবুর আলম বলেন, আপিল মোকদ্দমা নিষ্পত্তির জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।  শুনানীর জন্য প্রত্যেককে আলাদা আলাদা সময় দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ৯ কোটি বা ২৪ কোটি টাকার কোন বিষয় না। মিথ্যা বা ভুল তথ্য দিয়ে অ্যাফিডেভিট দিলে তার প্রার্থীতা বাদ। আমি যদি দায়িত্বে থাকতাম তাহলে রিটার্নিং অফিসারকে বলতাম, ওটা (মনোনয়ন) বাদ। 

আর ঋণগ্রহীতার জামিনদারও যদি প্রার্থী হয়ে থাকে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাহলে তারও (জামিনদার) মনোনয়ন বাদ। এদের দুইজনের মনোনয়ন বৈধ হওয়ার কোন সুযোগই নাই যুক্ত করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। প্রশ্ন ছিল জেলা নির্বাচন অফিসার বৈধ ঘোষণা করলো কীভাবে ওই দুই প্রার্থীকে?

জবাবে এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, ব্যাংকের চিঠি পাওয়ার পরও যদি কোন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করেন তাহলে তার (রিটার্নিং অফিসার) চাকুরিই থাকার কথা না।

বিআরইউ

Link copied!