Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪,

পূবাইলে অনলাইন জুয়ার নেশায় সর্বস্বান্ত মানুষ

রবিউল আলম, পূবাইল (গাজীপুর)

রবিউল আলম, পূবাইল (গাজীপুর)

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪, ০২:০৯ পিএম


পূবাইলে অনলাইন জুয়ার নেশায় সর্বস্বান্ত মানুষ

গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানার ৪টি ওয়ার্ডে মুঠোফোন অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা এই জুয়ায় বেশি আসক্ত হচ্ছেন। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন তাদের অনেকেই। এ কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ।

আমার সংবাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, পূবাইলের মাজুখান এলাকা থেকে শুরু করে পূবাইল থানার প্রত্যেক এলাকায় এই জুয়া বিস্তার লাভ করছে। সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন।

প্রথমে লাভবান হলেও পরবর্তী সময় খোয়াচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। পূবাইল থানাধীন মাজুখান, হায়দ্রাবাদ, মেঘডুবী, কুদাব, হারবাইদ, নন্দীবাড়ী, কালু মার্কেট, করমতলা, তালটিয়া, মিরের বাজার, পূবাইল বাজার, পূবাইল কলেজ গেইট, নয়ীপাড়া ভাদূন, ইছালী, কলের বাজার, চামুড্ডা বাজার ও বসুগাঁওয়ে রাতে অটোরিকশার গ্যারেজগুলোতে খেলা হয় নিয়মিত।

অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্মার্টফোনে নির্ধারিত কয়েকটি অ্যাপস ডাউনলোড করে সেখানে জুয়া খেলা চলে।

বিভিন্ন নামের প্রায় ১৫ থেকে ২০টির মতো অ্যাপসে সবচেয়ে বেশি জুয়া খেলা হয়। এসব অ্যাপসে ১০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো অঙ্কের টাকা দিয়ে শুরু করা যায়। জুয়ায় জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, এসব অ্যাপসের বেশিরভাগই পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাংলাদেশে এগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধি (এজেন্ট) রয়েছে।

পূবাইলের ৪টি ওয়ার্ডে মাজুখান, মিরের বাজার, পূবাইল বাজার, পূবাইল কলেজ গেইট এলাকায় প্রায় প্রতিটি বাজারেই রয়েছে এই ধরনের এজেন্ট। তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ বা প্রদান করে থাকে। এজেন্টরা বিদেশি অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে হাজারে কমপক্ষে ৪০ টাকা কমিশন পায়। এজেন্টদের মাধ্যমেই বিদেশে টাকা পাচার হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চলতি বছরের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, প্রথমে ৫০ টাকা বিনিয়োগ করে ১৬ হাজার টাকা পান তিনি। এতে লোভে পড়ে এই খেলায় মারাত্মক আসক্তি চলে আসে তার। গত ছয় মাসে এই জুয়ার নেশায় পড়ে মোটরসাইকেল বিক্রি ও বাবার জমানো টাকা নিয়ে পালিয়েছেন তিনি। এমনকি চলতি এসএসসি পরীক্ষার মধ্যেও তিনি খেলা ছাড়তে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তার ছেলে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। কিন্তু অনলাইন জুয়ার কারণে পড়ালেখায় মনোযোগ নেই। কৌশলে টাকা নিয়ে এটা খেলে। কোনোভাবেই বিরত রাখা যাচ্ছে না। ছেলের ভবিষ্যৎ অনলাইন জুয়া নষ্ট করে দিচ্ছে।

এ বিষয়ে পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান আমার সংবাদকে জানান, এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএইচ

Link copied!