Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪,

সমবায় সমিতির নামে ৫ কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা লাপাত্তা

ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম


সমবায় সমিতির নামে ৫ কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা লাপাত্তা

ফেনীতে রূপায়ণ বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত নিজাম উদ্দিন নামে এক গ্রাহক ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ওসিকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ওই উপজেলার ভোর বাজার এলাকায় স্থানীয় মোমিনুল হক, আনোয়ার হোসেন ভূট্টু ও আবু শাহাদত দুলালসহ ২০ জনের একটি চক্র ২০০৯ সালে রূপায়ণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের এ প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন।

এরপর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গ্রাহকদের থেকে আমানত ও সঞ্চয় সংগ্রহ শুরু করে। এরমধ্যে রিকশাচালক, দিনমজুর, প্রবাসী ও ব্যবসায়ীসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রাহক রয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটির অফিস বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায় দায়িত্বরতরা।

তিন অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরদবরপুর গ্রামের শফি উল্যাহর ছেলে ও সমিতির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ভূট্টু, এয়াকুব আলীর ছেলে ও সমিতির পরিচালক মোমিনুল হক এবং বগাদানা ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আবদুর রউফের ছেলে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু শাহাদত দুলাল।

সূত্র আরও জানায়, প্রতিমাসে এক লাখে এক হাজার এক শ’ টাকা লাভ দেয়ার কথা বলে সদস্যদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি।

এর মধ্যে উপজেলার নদোনা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের কাছ থেকে ১৫ লাখ, সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ৩ লাখ, রিয়াদের কাছ থেকে ৭ লাখ, পাইকপাড়া গ্রামের মাঈন উদ্দিনের কাছ থেকে ৫ লাখ, চরবদরপুর গ্রামের কাওছার হোসেনের কাছ থেকে ৮ লাখ ৮৫ হাজার, রিকশা চালক আবদুল ওহাবের কাছ থেকে ১ লাখ, আবুধাবি প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের কাছ থেকে ২৫ লাখ, আবুধাবি প্রবাসী জহির উদ্দিনের ২ লাখ, তার ভাই নিজাম উদ্দিনের কাছ থেকে ৩৬ লাখ, আলাউদ্দিনের ৮ লাখ, তার ভাতিজি তানহা-তানিজার ১ লাখ ৪০ হাজার, এবাদুল হকের সাড়ে ৩ লাখ এবং ব্যবসায়ী একেএম মাসুমের ১০ লাখ টাকাসহ অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়েছেন প্রতারকেরা।

যদিও পরিচালক দুলাল জানান, ২০১৭ সালের পর সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করার জন্য মোমিনুল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়। এই সুবাদে মমিনুল হক নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত হয়ে যায়।

এছাড়া তাদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন আমার কোনো যোগাযোগ নেই।

বগাদানা ইউনিয়নের তাকিয়া বাজারের অনিক-মেহেদী মার্কেটের নিচতলায় অফিসটির অবস্থান হলেও প্রতারক চক্রটি টাকা হাতিয়ে পালানোর পর ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

মামলার বাদী নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রতারকরা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য আমরা র‌্যাব-পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় জানান, মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। আশাকরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতারক আসামিদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, অভিযোগের বিষয়ে শুনেছি। প্রসিডিউর অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিষয়ে সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।

ইএইচ

Link copied!