মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে জাটকা রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল এ দুই মাস ভোলার মনপুরা মেঘনা নদী ৯০ কিলোমিটারকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে সরকার।
প্রতিবছরের মতো এবছরও আজ মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা দুইমাস নদীতে সকল প্রকার জাল ফেলা এবং মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। বিকল্প কাজ না থাকায় উপজেলার ১৫ হাজার জেলে এ সময়ে কর্মহীন হতে যাচ্ছেন।
মাছ শিকার থেকে বিরত থাকার লক্ষ্যে জেলেদের মাঝে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল বিতরণ করা হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা মাছ শিকার করবে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে মেঘনা নদীতে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মনপুরা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ২২ হাজার ২শত ৬১ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এর বাইরে অনিবন্ধিত রয়েছে আরও অন্তত ২০ হাজার জেলে। জাটকা রক্ষা কর্মসূচির আওতায় ১০ হাজার জেলেকে ২ মাসের ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ১০ হাজার জেলে খাদ্য সহায়তা পেলেও বাকিরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
জেলেদের অভিযোগ, তারা নিষিদ্ধ সময়ে জাটকা আহরণে বিরত থাকলেও অন্য সময়ে নৌপুলিশ ও অসাধু মৎস্য কর্মকর্তারা তাদের হয়রানি করেন। সরকারি খাদ্য সহায়তাও পান কম। তবে মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ বলছে- হয়রানির অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার খবরে শেষ মুহূর্তে মনপুরার মাছ ঘাটগুলোতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। ক্রেতা, বিক্রেতা ও পাইকারদের হাকডাকে মুখরিত মাছ ঘাটগুলো। কেউ কেউ নিষেধাজ্ঞার খবরে সাগর ও নদী থেকে মাছ শিকার শেষ ফিরে এসেছেন গন্তব্যে। কোন কোন জেলে আবার তাদের সম্পদ রক্ষাতে বিভিন্ন প্রকার পদ্ধতি অবলম্বন করছেন।
বৃহস্পতিবার উপজেলার জনতা বাজার, খারির খাল, ক্রসডেম, লতাখালি মাছ ঘাটে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
কথা হয় লতাখালি মাছঘাটের জেলে আবু তাহেরের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই মাসের যে অভিযান প্রত্যেক বছরই আমরা মানি। কিন্তু আমাদের সরকার যে চাল দেওয়ার কথা সেটা আমরা ঠিকমতো পাই না।
আলম বাজার ঘাটের জেলে রফিক বলেন, আমাদের অনেক দেনা আছে। বিভিন্ন ধরনের এনজিও থেকে আমাদের লোন কইরা জালসাবার করছি। সেখানে আমাদের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়। দুই মাসের এই অভিযানে যদি সরকার এনজিওর লোনের কিস্তি বন্ধ না করে তাহলে আমরা কীভাবে মাছ ধরা বন্ধ রাখবো। পেটের টানে এনজিওর অফিসারেগো চাপে ঠেকে নদীতে যাইতে হইবো। আর আমাদের এনজিওর লোনের কিস্তিগুলান এই দুই মাস বন্ধ রাখার দাবি করছি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব মনপুরা) মারুফ হোসেন মিনার জানান, আজ মধ্যরাত থেকে নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধে সার্বক্ষণিক মৎস্য বিভাগ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের যৌথ সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এতিমধ্যেই জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। তবে আইন অমান্যকারী জেলেদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আনা হবে।
ইএইচ