বরগুনা প্রতিনিধি
মার্চ ১, ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম
বরগুনা প্রতিনিধি
মার্চ ১, ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম
ভবনের ছাদে উঠে বাবাকে ফোনে ঢাকার বেইলি রোডে আগুনের খবর জানিয়েছিল নাঈম। বলেছিলেন আব্বা আগুন লাগছে, দোয়া করো, মাকে বইলো আমার জন্য দোয়া করতে, বেঁচে থাকলে দেখা হবে। এরপর আর কথা বলেনি নাঈম। এখন পুত্রশোকে বাকরুদ্ধ বাবা-মা। বাড়িতে পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়। গোটা এলাকায় শোকের মাতম।
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান মো. নাঈম। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার ৩নং ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের ছোট গৌরীচন্না এলাকার নান্টু মিয়ার ছেলে। দুই ভাই বোনের মধ্যে নাঈম বড়। বাবা নান্টু মিয়া পেশায় ভ্যানচালক, মা লাকি বেগম গৃহিণী।
মা-বাবা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মেধাবী ছেলে নাঈমকে এইচএসসি পাশ করান। মা-বাবার কষ্ট ঘোঁচাতে ও একমাত্র বোনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে একমাস আগে কাজের সন্ধানে রাজধানী ঢাকায় যান। মাত্র তিনদিন আগে বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই বিল্ডিংয়ে আরএফএল কোম্পানির একটি শাখায় কাজ নেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
নাঈমের মা লাকি বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, বাছারে মোর কোলে এনে দেও, মুই একটু মোর পোলার মুখটা দেখব। ঈদের সোমায় বাবায় মোর বাড়তে আসবে কইছে। আহারে এইয়া আলহে মোর কপালে। মোর একটা পোলা, মুই এহন কি লইয়া বাচমু...।’ বলতে বলতে ফের মূর্ছা যান লাকি বেগম।
নাঈমের মৃত্যু অকাল মৃত্যুর খবরে এলাকা জুড়ে বইছে শোকের মাতম। বাড়িতে ছুটে এসেছেন পাড়া-প্রতিবেশীসহ সহপাঠীরাও।
৩ নম্বর ফুলঝুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার কবির বলেন, ‘নাঈম মেধাবী ছাত্র ছিল। অর্থাভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি। অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়েছিল। এখন এই পরিবারটির হাল ধরার মতো কেউ আর অবশিষ্ট রইল না।
নাঈমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করব পরিবারটির পাশে থাকার।
ইএইচ