Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকের অপসারণে সোচ্চার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মার্চ ১০, ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম


ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকের অপসারণে সোচ্চার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

নানা অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনার পর এবার কক্সবাজারের রামু সরকারি কলেজের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা ওই শিক্ষককে দ্রুত অপসারণ করে ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং কলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা অনিয়ম-দুর্নীতির নিরপেক্ষ তদন্ত করে অধ্যক্ষসহ জড়িতদের শাস্তির দাবিও তোলেন।
রোববার সকালে কলেজের প্রাঙ্গণে সচেতন ছাত্রছাত্রীর নামে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘যৌন নির্যাতনকারী হোছাইনের শাস্তি চাই‍‍`, ‍‍`অধ্যক্ষের মদদপুষ্ট শিক্ষক হোছাইনের অপসারণ চাই‍‍`, ‍‍`যৌন নির্যাতনমুক্ত নিরাপদ শিক্ষাঙ্গণ চাই‍‍` শ্লোগানসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শতাধিক ছাত্রছাত্রী এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং শাস্তির দাবি জানান।

মানববন্ধনে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মোশারেফা খানম বলেন, অধ্যক্ষের মদদপুষ্ট হোছাইন স্যার এভাবে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করার সাহস কোথায় পেলেন? আমরা নিরাপদ শিক্ষাঙ্গণ চাই। যৌন হয়রানিকারী শিক্ষকের শাস্তি চাই।

কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‍‍`শিক্ষকের হাতে যদি ছাত্রীরা নিরাপদ না থাকে তাহলে কোথায় নিরাপদ থাকবে? মেয়েরা যদি নিরাপত্তা না পায়, তাহলে বাসা থেকে কলেজে আসবে কীভাবে? তাই আমরা নিরাপদ শিক্ষাঙ্গণ চাই৷‍‍`

আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অধ্যাপক আকতার জাহান কাকলি বলেন, ‍‍`ব্যাপারটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। আমাদের অধ্যক্ষও খুবই লজ্জিত।‍‍`

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ওহিদুল কবির বলেন, ‘শিক্ষক হিসেবে আমরা খুবই লজ্জা বোধ করছি। রামু কলেজে চাকরি করি, কোথাও বের হতে পারছি না। ফোনে বা সামনাসামনি আমাদের শুনতে হচ্ছে আপনারা শিক্ষক হয়ে কীভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটান!‘

কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবদুল হক বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য দুঃখজনক। আমি আশা করি অধ্যক্ষ মহোদয় বিষয়টা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।’

এদিকে কলেজের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেও কলেজে উপস্থিত ছিলেন না অভিযুক্ত বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইন। বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করার প্রস্তুতি চলছে। এবং ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাল থেকে কমিটি কাজ শুরু করবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ৭ই মার্চের অনুষ্ঠান ফেলে রামু সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজ করার চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী তার সহপাঠী ও অভিভাবকদের বিষয়টি অবহিত করেন। পরে সহপাঠীরা হোছাইনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে কক্সবাজার আদালতপাড়ায় নিয়ে যান। সেখানে অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম কাজলের চেম্বারে ৩০০ টাকা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা (অঙ্গীকারনামা) দিয়ে মুক্তি পান হোছাইন।

অঙ্গীকারনামায় হোছাইন নিজের অপরাধ স্বীকার করেন এবং ভবিষ্যতে কোনো ছাত্রী বা অন্য কোনো মেয়ের সাথে কোনো প্রকার অনৈতিক আচরণ করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।

ইএইচ

Link copied!